ক্যাটাগরি

গুতেরেসকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় যাওয়ার আহ্বান বানের

সমস্যাটিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় বিবেচনা করে এই অশান্তিকে দক্ষিণপূর্ণ এশিয়ার দেশগুলোর অগ্রাহ্য করা উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেছেন বান।

সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে বান এসব কথা বলেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দেশটির সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছেন জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিনা শানার, কিন্তু তাকে দেশটি সফরের অনুমতি দেয়নি বাহিনীটি।

২০০৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত জাতিসংঘের মহাসচিবের দায়িত্বপালন করা বান নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বলেন, “পরিস্থিতির গুরুত্ব ও আশু প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায়, সহিংসতা বৃদ্ধি রোধ করতে, আমি বিশ্বাস করি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় যুক্ত হওয়ার জন্য মহাসচিবকে তার মধ্যস্থতার উপায়গুলি ব্যবহার করা উচিত।”  

বৈঠকে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক বলেন, “গুতেরেস অনেকদিন ধরে মিয়ানমারের বিষয়ে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে যুক্ত। তার বিশেষ দূতসহ মধ্যস্থতাকারীরা সবসময়ই সক্রিয় আছেন। আমরা সবাই এই সহিংসতার অবসান দেখতে চাই।” 

গুতেরেস বলেছেন, “ঐক্যবদ্ধ আঞ্চলিক উদ্যোগের ওপর ভিত্তি করে একটি জোরালো আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া দরকার।”

পরিস্থিতির আরও অবনতি রোধ করতে আঞ্চলিক নেতাদের তাদের প্রভাব খাটানোর আহ্বান জানিয়ে বিপর্যয়ের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করার তাগিদ দিয়েছেন জাতিসংঘের এই মহাসচিব।

১০ দেশের জোট অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশন্স (আসিয়ান) সহযোগী সদস্য মিয়ানমারে চলা সহিংসতার অবসানের একটি উপায় বের করার চেষ্টা করে আসছে। মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের ২৪ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ায় আসিয়ানের একটি সম্মেলনে উপস্থিত থাকার কথা আছে।

“আসিয়ানের অবশ্যই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে এটি পরিষ্কার করে দেওয়া উচিত যে চলমান পরিস্থিতি অত্যন্ত শোচনীয় হওয়ায় এটিকে শুধু আর অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা যায় না,” বলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বান, যিনি এখন ‘এল্ডার্স গ্লোবাল লিডার্স’ গোষ্ঠীর একজন সদস্য। 

মিয়ানমারের মানবাধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠী অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) ভাষ্য অনুযায়ী, সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর হাতে এ পর্যন্ত ৭৩৭ জন নিহত হয়েছেন এবং তিন হাজার ২২৯ জনকে কারাবন্দি করা হয়েছে।

সম্মিলিত পদক্ষেপের বিষয়ে বিবৃতি দেওয়ার বাইরে নিরাপত্তা পরিষদকে আরও কিছু করারও তাগিদ দিয়েছেন বান। কিন্তু মিয়ানমারের জান্তাদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদ শক্ত কোনো পদক্ষেপ নিতে গেলে রাশিয়া ও চীন তা আটকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের কিছু কূটনীতিক।