ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা সের্গেই নিকিফোরব বিবিসি’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কিইভের চারপাশের অঞ্চল থেকে পিছু হটার সময় রুশ বাহিনী যুদ্ধাপরাধের আলামত রেখে গিয়ে থাকতে পারে।
কিইভের কাছে বুচা, হস্তমেল এবং ইরপিন শহর থেকে যেসব চিত্র পাওয়া যাচ্ছে তা ‘হৃদয়বিদারক’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। নিকিফোরব বলেন, ইউক্রেইন বাহিনী শহরগুলোতে গণকবর খুঁজে পেয়েছে। সেখানে লাশগুলোর হাত-পা বাঁধা ছিল। তাদেরকে পিঠে, মাথায় গুলি করে মারা হয়েছে।
“এরকম কেন ঘটছে তা বোঝা খুবই কঠিন। এটি পুরোপুরি নির্মমতা। সামরিক দিক থেকে এসব করার কোনও প্রয়োজন ছিল না,” বলেন তিনি।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরুর দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে কিইভের উপকণ্ঠে বুচা নামের ওই শহরে পৌঁছে গিয়েছিল রুশ বাহিনী। সেখানে রাশিয়ার ট্যাংক ও সামরিক বাহনের একটি কলাম ইউক্রেইনীয় বাহিনীর চোরাগোপ্তা হামলায় পড়ে ধ্বংস হয়।
ইউক্রেনীয় বাহিনীর এরকম আরও অনেক প্রতিরোধ যুদ্ধের মুখে রুশ সেনাদের অগ্রযাত্রা থমকে গেছে। পাঁচ সপ্তাহ তুমুল লড়াইয়ের পর ওই এলাকা থেকে সরে গেছে রুশ বাহিনী। সেনারা চলে যাওয়ার পর শহরটির রাস্তায় সাধারণ মানুষের লাশ পড়ে থাকার যে ভয়াবহ চিত্র সামনে আসছে তাতে স্তম্ভিত হয়েছে বিশ্ব।
বিভিন্ন দেশ বুচায় রাশিয়ার সেনাদের ওই হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানাচ্ছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বুচা থেকে আসা ছবি অসহনীয় বলে বর্ণনা করেছেন। ইউক্রেইনের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, “রুশ কর্তৃপক্ষকে এই অপরাধের জবাব দিতে হবে।”
নেটোর মহাসচিব জেনারেল ইয়েন্স স্টলটেনবার্গও বুচায় বেসামরিক নাগরিক হত্যা ‘মেনে নেওয়া যায় না’ বলে মন্তব্য করেছেন। সিএনএন –কে তিনি বলেন, ইউরোপে আমরা বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে এমন বর্বরতা অনেক দশক ধরে দেখিনি। এ ঘটনাই যুদ্ধ বন্ধের প্রয়োজনীয়তা সামনে নিয়ে এসেছে, বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রও বুচায় হত্যাযজ্ঞের নিন্দা করে বলেছে, ইউক্রেইনে রাশিয়ার চলমান নৃশংসতায় প্রতিটি দিন কী ঘটে চলেছে তার বাস্তব চিত্র এটি। জার্মানি বুচায় রাশিয়ার হত্যাযজ্ঞকে ‘ভয়াবহ যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়েছে এবং যুক্তরাজ্য এই বেপরোয়া হত্যাযজ্ঞের তদন্ত আহ্বান করেছে।