পার্লামেন্টের অতি-গুরুত্বপূর্ণ এ অধিবেশনে দলের কৌশল কী হবে তা নিয়েও মত বদলেছেন তিনি। বলেছেন, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্কের সময় তিনি নিজেই উপস্থিত থাকবেন।
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনপ্রণেতাদের রোববারের অধিবেশনে উপস্থিত হয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে জোরাল বক্তব্য দেওয়ারও নির্দেশনা ইমরান দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ডন।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত জনসাধারণের সঙ্গে সরাসরি এক প্রশ্ন-উত্তর সেশনে ইমরান সমর্থকদের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখানোর ডাক দেন। আর আস্থাভাজন ও আইনি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর দলীয় এমপিদের জন্য নির্দেশনা বদলে দেন।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ওই সেশনে ইমরান বলেন, রোববারের গুরুত্বপূর্ণ ভোট নিয়ে তার ‘একাধিক পরিকল্পনা’ রয়েছে; তিনি সমগ্র দেশকে ‘চমকে দিতে পারেন’ বলেও জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী পরে ডনকে জানান, প্রধানমন্ত্রী দলের আইনপ্রণেতাদের কাছে পাঠানো আগের চিঠিটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এবং রোববার নিজেই পিটিআই সদস্যদের নেতৃত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন।
আগের ওই চিঠিতে ইমরান পিটিআই এমপিদের রোববার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের অধিবেশনে না যেতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
ফাওয়াদ চৌধুরী জানান, শনিবার রাতে ইমরানের ডাকা ডিনারে পিটিআইয়ের ১৪০ জনের মতো এমপি উপস্থিত হবেন।
সরকার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে (পার্লামেন্ট) দীর্ঘ আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেন বিরোধী আইনপ্রণেতাদের পাশাপাশি সরকার দলীয়রাও মন খুলে কথা বলতে পারে, বলেছেন তথ্যমন্ত্রী।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে রোববার পিটিআই কীভাবে অনাস্থা ভোটে বাধা দিতে পারে তা নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন চলছে। এর একটিতে বলা হচ্ছে, ইমরানের সমর্থকদের এমনভাবে পার্লামেন্টের কাছে বিক্ষোভ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন বিরোধী আইনপ্রণেতা ও পিটিআইয়ের দলছুটরা রোববার শারীরিকভাবে অধিবেশনে উপস্থিতই হতে না পারে।
অনাস্থা ভোটের ফল কী মেনে নেবেন ইমরান খান?
অনেকের ধারণা, ক্ষমতাসীন দলের এমপিরা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘায়িত করে বিরোধীদের ধৈর্যর পরীক্ষা নিতে পারেন; কিংবা এমন কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে পারেন, যার প্রতিবাদে বিরোধীরা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভে নেমে পড়বেন, যা স্পিকারকে ভোট স্থগিত করতে বাধ্য করবে।
ফাওয়াদ এসব গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই পুরো প্রক্রিয়া অগ্রসর হবে।
পিটিআই কর্মীরা ‘রক্তপাত’ চায়, বিভিন্ন গণমাধ্যমের এ ধরনের ‘অপপ্রচারের’ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
তবে বিরোধীরা বলছে, তারা সরকারের যে কোনো চাল মোকাবেলায় প্রস্তুত।
বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরীফ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরানের বিরুদ্ধে ‘দেশকে বিভক্ত করা ও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার’ অভিযোগ এনেছেন।
আরেক প্রভাবশালী বিরোধী নেতা বিলওয়াল ভুট্টো-জারদারি বলেছেন. পরাজিত লোকটি (ইমরান) যে শান্তি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছেন, তা দুর্ভাগ্যজনক।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিও এক সংবাদ সম্মেলনে ইমরানকে ‘খেলোয়াডসুলভ মনোভাব’ দেখিয়ে ‘বাস্তবতা মেনে নিতে’ অনুরোধ জানিয়েছেন।