ক্যাটাগরি

‘টানাপোড়েন নয়’ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ‘গভীর’:পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সোমবার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে দুই দেশের সহযোগিতা নিয়ে আলাপে তিনি এ কথা বলেন।

দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে বৈঠক করতে রোববার ওয়াশিংটনে পৌঁছান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

ব্লিংকেনের সঙ্গে সোমবারের বৈঠকে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, অর্থনৈতিক
সম্পর্ক, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।

র‍্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার পর সম্পর্কের ‘টানাপোড়েন’ এবং সোমবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক
নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন,
“আপনারা বলেন, টানাপোড়েন, আমরা টানাপোড়েন বলি না।

“আমরা বলি, ভালো সম্পর্ক হওয়ায় আমাদের যা যা আছে,
সেগুলো আমরা অকপটে বলতে পারি। সম্পর্ক যদি একটু ফর্মাল হয়, তাহলে অনেক সময় অনেক জিনিস
বলা যায় না।”

“এদের সাথে আমাদের সম্পর্ক খুব গভীর, সেজন্য ওরা যেটা
অবজার্ভ করে সেটা তারা বলে। আমরা তার প্রেক্ষিতে যদি কোনো প্রয়োজন হয়, যদি রেমিডিয়াল
মেজার প্রয়োজন হয়, আমরা সেটা নিই।”

‘গুরুতর’ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমান পুলিশ প্রধান
বেনজীর আহমদসহ বাহিনীর সাত কর্মকর্তার উপর গত বছর ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে
যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে ওই নিষেধাজ্ঞার পর ঢাকার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার
মধ্যে ১৫ ডিসেম্বর ব্লিংকেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ হয় মোমেনের।

সরকার
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘সুসম্পর্ককে আরও গভীর করতে’ চায় জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “রাজনৈতিক
সম্পর্কও আমাদের ভালো। আরও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

“আমরা তাদেরকে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা চালাব। কারণ
নীতিগতভাবে তো আমরা এক। ওরা যা চায়, আমরাও তা চাই। আমরা দুনিয়াতে সন্ত্রাস চাই না,
তারাও চায় না। আমরা মানবপাচার, মাদক পাচার কমাতে চাই, তারাও তা চাই। আমরা গণতন্ত্র
চাই, তারাও চায়।”

যুক্তরাষ্ট্রের
বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকে শুল্ক প্রত্যাহারের আহ্বান
জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা আমাদের থেকে মূলত গার্মেন্টসই কেনেন। গার্মেন্টসটা আপনারা এখানে বাজারে
বড় দামে বিক্রি করেন।

“আপনি যদি ট্যারিফটা উইথড্র করেন, তাহলে কিন্তু আপনাদের ক্রেতারা আরও উপকৃত হবে,
আপনাদের ধন্যবাদ দিবে। নির্বাচনে আপনারা জিতে যাবেন।”

একক বাজার হিসাবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শীর্ষ গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৭ দশমিক ২৭৭ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে।

যাতে আগের বছরের তুলনায় ৪৩ দশমিক ৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। ২০২০
সালে দেশটিতে রপ্তানির অংক ছিল ৫ দশমিক শূন্য ৬৭ বিলিয়ন ডলার।

বিদ্যুৎ-জ্বালানির বাইরে ব্লু ইকোনমি, ওষুধ খাত ও প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের
আরও বিনিয়োগ আহ্বানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা বিরাট সমুদ্র খুলে দিয়েছি। সেখানে আসেন। সাম্প্রতিককালে
আপনাদের বিনিয়োগের ৯০ শতাংশ-ই হচ্ছে জ্বালানি ও বিদ্যুতে।

“আমরা চাই আপনারা আপনাদের দেশের ওষুধের দাম বেশি, আমরা চাই আপনারা আমাদের এখানে
ওষুধ ‍উৎপাদন করেন, আপনাদের কনজ্যুমাররা খুশি হবে, স্বস্তায় আপনি বিক্রি করতে পারবেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের তথ্য প্রযুক্তি অনেক বিস্তৃত জায়গা। আমাদের তরুণরা খুবই মেধাবী। আপনারা
সম্ভাবনাময় এই খাতে ওদের সাথে কাজ করেন।”

বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের পাশাপাশি এই অঞ্চলে চারশ’ কোটি মানুষের বসবাস হওয়ায় বাংলাদেশে
বিনিয়োগ বেশ লাভজনক হবে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।