মঙ্গলবার
জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমাদের ৫ থেকে ১০ শতাংশ জায়গায় মাঝে মধ্যে পাইপ
ফাটা থাকে। যখনই অভিযোগ পাই, সঙ্গে সঙ্গে আমরা তা ঠিক করে দিই। তারপরও কিছু জায়গায়
সমস্যা হয়। নয়া পল্টনে আমার নিজের বাসাতেই পানিতে গন্ধ আছে।”
ঢাকা
ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত ‘নগরবাসীর চাহিদা : ঢাকা
ওয়াসার সক্ষমতা’
শীর্ষক সংলাপে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলে নগরবাসীকে পানি ফুটিয়ে খাওয়ার
পরামর্শ দেন।
সম্প্রতি
রাজধানীতে ডায়রিয়ার যে প্রকোপ দেখা দিয়েছে, তাতে ওয়াসার দায় আছে কি না- এ প্রশ্নের
উত্তরে তাকসিম বলেন, “আইসিডিডিআর,বি
আমাদের নয়টা জায়গার লিস্ট দিয়েছে- যেসব এলাকায় ডায়রিয়া বেশি। ল্যাব টেস্ট করিয়ে
সেগুলোতে কোনো ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়নি। তার পরও সাবধানতা হিসেবে সে জায়গাগুলোতে
আমরা ক্লোরিন (পানি বিশুদ্ধকরণে ব্যবহৃত অন্যতম রাসায়নিক) বাড়িয়ে দিয়েছি।“
ওয়াসার
উৎপাদন সক্ষমতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এক যুগ ধরে এই সংস্থার এমডির দায়িত্ব
চালিয়ে যাওয়া তাকসিম বলেন, “ঢাকায়
পানির টোটাল চাহিদা ২১০ কোটি থেকে ২৫০ কোটি লিটার পর্যন্ত হয়। আমাদের উৎপাদন
ক্ষমতা ২৭০ কোটি লিটার। তাই রমজানে কোথাও পানির সঙ্কট হবে না।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবে মঙ্গলবার ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘নগরবাসীর চাহিদা ও ওয়াসার সক্ষমতা’ শীর্ষক সংলাপে ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
কর্মসংস্থান,
শিক্ষাসহ নানা কারণে ঢাকায় যে প্রতিনিয়ত মানুষ বাড়ছে এবং তাতে সেবাখাতকে যে
চ্যালেঞ্জের মুখে থাকতে হয় সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “ঢাকায় ক্রমাগত মানুষ
বেড়ে যাওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ঢাকায় কাগজে-কলমে মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখ।
আমরা ২ কোটি মানুষের কথা মাথায় রেখে সেবা দিই।
“এখন
আবার অনেকে বলছেন মানুষ হয়ে গেছে বর্তমানে ২ কোটি ৩০ লাখ। এতগুলো মানুষ হুট করে
বেড়ে গেলে চাহিদা পূরণ করতে মাঝে মাঝে হিমশিম খেতে হয়।”
ঢাকায় পানি সরবরাহ ও
এর মান নিয়ে নানা অভিযোগের মধ্যেই গেল ফেব্রুয়ারির শুরুতে পানির দাম কমপক্ষে ২০
শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করে ওয়াসা। সংস্থাটির যুক্তি, সরকারের ভর্তুকি
কমাতেই তারা পানির দাম বাড়াতে চান।
তাকসিম বলেন, “ঢাকা শহরের সেবা খাতগুলো সূচকের দিক থেকে নিচের
দিকে থাকলেও পানি ব্যবস্থাপনায় ঢাকা ওয়াসা এশিয়ার দেশগুলোর মাঝে উপরের দিকে আছে।
দেশের সার্বিক জিডিপির ৪৫ ভাগ ঢাকা থেকে আসে। ঢাকায় যদি পানি সংকট হয় তার প্রভাব
সরাসরি জিডিপিতে পড়বে।
“এ
কারণে ঢাকা ওয়াসা দেশের উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে গতানুগতিকতার বাইরে এসে কর্মসূচি
গ্রহণ করছে এবং নগরবাসীকে সেবা নিশ্চিত করে যাচ্ছে।”
সবার
জন্য নিরাপদ পানির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকসিম এও বলেন, “কাউকে পানির আওতার
বাইরে রেখে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই আমরা সব বস্তিবাসীদের পানির অধিকার নিশ্চিত
করেছি।”
ডুরার
সভাপতি রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিকের সঞ্চালনায় সংলাপে
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসার কারিগরি পরিচালক শহীদ উদ্দিন।