টানা ৮১ দিন হাসপাতালে থেকে বাড়িতে ফেরার ৩৪ দিন পর বুধবার পুনরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে যান তিনি।
গুলশানের বাড়ি থেকে বিকালে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ওই হাসপাতালে যাওয়ার পর সন্ধ্যায়ই তিনি ফিরে আসেন।
এরপর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “উনি অসুস্থ। উনার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। উনি নিজেও দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।”
কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপর মেডিকেল বোর্ড দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবে।
এভারকেয়ার হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধায়নে একটি মেডিকেল বোর্ড বিএনপি চেয়ারপারসন চিকিৎসা নিচ্ছেন।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া এখনও অসুস্থ জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, “যে মানুষটি আলিয়া মাদ্রাসায় হেঁটে হেঁটে গেছেন। সেই মানুষটি আজকে চার বছরের মাথায় গত ২০২০ সনের ২৫ মার্চ থেকে হুইল চেয়ার বাউন্ড হয়েছেন। এভারকেয়ার হসপিটালে তিন অকেশনে প্রায় ছয়টি মাস ভর্তি থেকেছেন।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতা নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের কোনো কোনো নেতার বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জাহিদ বলেন, “অসুস্থ মানুষের অসুস্থতা নিয়ে যারা ব্যাঙ্গ করেন, যারা কথা বলেন, তাদেরকে বুঝ দেওয়ার ক্ষমতা আল্লাহ রাব্বুল আ‘লামীন দিতে পারেন, আমাদের পক্ষে এটা সম্ভব না।
“উনি অসুস্থ যদি নাই হতেন আজকেই উনার মেডিকেল চেকআপের কী প্রয়োজন ছিল?”
মেডিকেল বোর্ড সুপারিশের পরও চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি না দেওয়ায় সরকারের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপি নেতা জাহিদ।
দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালে কারাগারে যেতে হয়। দেশে করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার।
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা করাতে বিদেশে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে তার পরিবার ও বিএনপি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনিভাবে তা সম্ভবপর নয় বলে সরকার তা প্রত্যাখ্যান করছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে হলে তাকে পুনরায় কারাগারে ফিরে নতুন করে মুক্তির আবেদন করতে হবে।
খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, দাঁত, চোখের সমস্যাসহ শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।
গত বছরে নভেম্বরে তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ে। তখন তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন টানা ৮১ দিন। গত ১ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি।
বুধবার খালেদা জিয়া ফেরার পর গুলশানের সেই বাড়িতে সংবাদ ব্রিফিংয়ে ডা. জাহিদ ছাড়াও ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এস এম জাহাঙ্গীর, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক আল মামুন।