ক্যাটাগরি

৫৬ লাখ মানুষকে দক্ষ করার লক্ষ্য জাতীয় কর্মসংস্থান নীতিতে

বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জাতীয় কর্মসংস্থান নীতি ২০২২’ এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এই নীতিমালা চূড়ান্ত করার আগে দীর্ঘসময় আলোচনা হয়েছে।

“এখন যে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসছে, আধুনিক বিশ্বের প্রযুক্তি পরিবর্তন হচ্ছে, ফলে আমাদের উৎপান, প্রযুক্তি ও শ্রমিকের যে দক্ষতা, সেটার ব্যাপক পরিবর্তন দরকার। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এটা (নীতিমালা) নিয়ে আসা হয়েছে।”

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ নীতিমালার মূল উদ্দেশ্য হল দেশের শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আধুনিক ও যুগোপযোগী নীতি পরিবেশ তৈরি করা।

“বর্তমান যে শিক্ষা ব্যবস্থা বা দক্ষতা, তা দিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মোকাবেলা করতে পারবে না। এজন্য জাতীয় কর্মসংস্থান নীতিতে এসব বিষয় ঢোকানো হয়েছে, যে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের ৫৬ লাখ লোককে পুনরায় দক্ষ করে তুলতে হবে। আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে করতে হবে। দ্রুত না করলেতো ম্যাচ করতে পারবে না।”

বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার, বিদ্যুতের ব্যবহার এবং ট্রানজিস্টার আবিষ্কার ব্যাপক শিল্পায়ন সৃষ্টির মাধ্যমে মানবসভ্যতার গতিপথ বদলে দিয়েছিল বলে ওই তিন ঘটনাকে তিনটি শিল্পবিপ্লব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

এখন বলা হচ্ছে, ডিজিটাল প্রযুক্তির নিত্যনতুন উদ্ভাবনের পথ ধরে আসছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, যেখানে বহু প্রযুক্তির এক ফিউশনে ভৌতজগৎ, ডিজিটালজগৎ আর জীবজগত পরস্পরের মধ্যে লীন হয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পথ ধরে আগামী দিনে ১০টি প্রযুক্তি বিশ্ব শাসন করবে। সেসব নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারলে, দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে বিপুল সংখ্যক মানুষ কাজ হারাবে।

“তখন দেখা যাবে ওই প্রযুক্তিও অ্যাডভান্সড হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। ২০৫০ সালের পরে পঞ্চম শিল্প বিপ্লব আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে থিম হবে পার্সোনালাইজেশন।

“বিশেষ করে কম কর্মসংস্থানপ্রত্যাশী মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, অকর্মনীয়দের উপায় নির্ধারণ, জনশক্তিকে কর্মশক্তি উপযোগী ও দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে বেকারত্বহীন দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠাই এই নীতির লক্ষ্য।”

সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতেই সরকার এ নীতিমালা করেছে জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এটা বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল৷

“এছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে জাতীর পিতার উন্নত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ, ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে মর্যাদা লাভ এবং ২১০০ সালের মধ্যে নিরাপদ বদ্বীপ গঠনের যে পরিকল্পনা বা লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলোর জন্য এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা খুবই প্রয়োজন।”

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, জাতীয় অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে ‘শোভন ও নিরাপদ কর্ম পরিবেশ’ নিশ্চত করা, শ্রমিকদের দক্ষতা কাজে লাগানো, দক্ষ শ্রমিক গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগেও প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে এই বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এ নীতির উদ্দেশ্য।