বৃহস্পতিবার গণভবনে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স’র তৃতীয় সভায় তিনি বলেন, “নিরাপত্তার দিকটাতেও খুব বেশি নজর দিতে হবে এখন।
“আসলে প্রযুক্তি আমাদের যেমন সুযোগও সৃষ্টি করে দেয়, অনেক সময় সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে। সেদিক থেকে নিরাপত্তার দিকটা আমাদের আরও নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে।”
“এটা সব ক্ষেত্রে, একেবারে বাংলাদেশে ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ থেকে শুরু করে- সব ক্ষেত্রেই এটা আমাদের ভাবতে হবে এবং আরও (সর্তক হতে হবে),” বলেন তিনি।
এসব ক্ষেত্রে সুদীরপ্রসারী চিন্তার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “প্রযুক্তির উৎকর্ষ প্রতিদিনই বাড়তে থাকবে। প্রতিদিনই কিন্তু নতুন নতুন চিন্তা আসবে। আমি এখন হয়ত ভাবছি, এটা বোধহয় প্রযোজ্য, কিন্তু সেটা সামনে আরও যাবে। আমাদের সবসময় ওই ভাবে মাথায় রাখতে হবে।”
গবেষণা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “প্রযুক্তির উৎকর্ষতা প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকবে, এজন্য গবেষণার ওপর আমাদের আরও গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের গবেষণা সবসময় দরকার। আমাদের গবেষণাগুলো সবসময় করতে হবে। আমরাও যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারি।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশই সকলের কাছে অনুকরণীয় একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। সেটাই আমি চাই। আমরা অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবো কেন, আমাদের দেশের মানুষের মেধা আছে। সেটা বিকাশের সুযোগ করে দিলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারব।”
যুব সমাজকে দক্ষ করে গড়ে তোলার উপর জোর দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, “আমাদের যুব সমাজকে তৈরি করতে হবে। ইয়াং জেনারেশনকে তৈরি করতে হবে। কারণ আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা বলছি- শুধু এ কথা চিন্তা করা না; বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের তরুণ সমাজকে আরও বেশি উপযুক্ত করে গড়ে তোলা, উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া, উপযুক্ত ট্রেনিং দেওয়া বা তাদেরকে সেভাবে বা তাদের মন মানসিকতাও গড়ে তোলা সেটাই আমাদের করতে হবে।”
তরুণদের নিয়ে ভাবনার কথা তুলে ধরতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “সবচেয়ে বড় কথা আমাদের তরুণ সম্প্রদায়ের সংখ্যা বেশি। যে কারণে আমরা যদি তাদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারি- শুধু এই প্রজন্মকে না, সামনের প্রজন্মকেও আমরা কিভাবে গড়তে পারি। তাতে বাংলাদেশ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট-এ যাব। সেই সাথে সাথে আমাদের শিক্ষা-দীক্ষা, শিল্প-বাণিজ্য, অর্থনীতি সব দিক থেকেই আমরা এগুতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি।”
‘মেধা পাচারের’ প্রচলিত ধারণার সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, “অনেকে বলেন- আমাদের মেধা চলে যাচ্ছে; এটা নিয়ে আমি খুব বেশি চিন্তা করি না। কারণ একটা সময় যারা যায় হয়ত, এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে বাইরে যায়, টাকা-পয়সা কামাই করে। আবার অনেকেই কিন্তু, বাইরে যারা পড়াশোনা করছেন অনেকেই কিন্তু দেশে ফিরে আসছেন।
“বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে অনেকে, নিউ জেনারেশন তারা কিন্তু চলে আসছে। এসে কাজ করছে। কারণ আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ করার ফলেই কিন্তু কাজগুলো সহজ হয়ে গেছে, যে কারণে তারা এখন দেখে যে বাংলাদেশে বসেও তারা নিজেদের কাজগুলো ভালোভাবে করতে পারছে।”
বৈশ্বিক দৃষ্টিতে দেশের অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ কিন্তু এখন একটা আকর্ষণীয় স্থান, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। আমাদের গৎবাধা পুরোনো কথা আর বলার দরকার নেই যে ব্রেন ড্রেন…। আমাদের তো লোকের অভাব নেই। আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষাগ্রহণ করবে এবং আসবে। বরং বাইরে থেকে বাংলাদেশের পজিশন এখন অনেক দিক থেকে ভালো। … অনেক ভালো অবস্থায় আমরা আছি।”