বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে ‘স্বল্পোন্নত
দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি : ভবিষ্যতের রূপরেখা প্রণয়নে নারীর অংশীদারিত্বের
অর্ন্তর্ভুক্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এই আহ্বান
আসে।
সভায় মূল প্রবন্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক শরমিন্দ
নীলোর্মি বলেন, “পরিসংখ্যান ব্যুরোর উদ্যোগে মেটা
ডিসএগ্রিগেটেড ডেটার সহজপ্রাপ্তি নিশ্চিত করে জেন্ডার ইকুয়ালিটি প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের
শক্তি ও সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, “জেন্ডার
বিভাজিত তথ্য ও পরিসংখ্যান আমরা সঠিকভাবে পাই না। ফলে সঠিক চিত্রটিও আমরা তুলে ধরতে
পারি না। এটি হালনাগাদ করা জরুরি।”
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা
আজিজ বলেন, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডেটা গ্যাপ
রয়েছে, যেকারণে সঠিক তথ্য উঠে আসছে না। গুণগতমানের ডাটাবেইজ তৈরিতে সরকার নানা প্রশিক্ষণ
কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।”
মূল প্রবন্ধে সামাজিক অগ্রসরতাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ
বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। সম্পদ ও সম্পত্তিতে নারীর মালিকানা নিশ্চিতের জন্য কর্মসূচি
গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, “যে কোনো
প্রকল্প গ্রহণের সময় সরকার নারীদের প্রাধান্য দিচ্ছে। কিছু ব্যত্যয় হচ্ছে, বৈষম্যের
বিষয় অবশ্যই আছে।”
সচিব জুয়েনা আজিজ বলেন, নারীবান্ধব নানা কর্মসূচি সরকার থেকে নেওয়া হলেও
সুবিধাভোগীদের সচেতনতার অভাবে অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয় না।
জাতীয় অর্থনীতিকে টেকসই করতে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করে কৃষি ও
মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ানোর প্রস্তাব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের
চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এম আকাশ ।
মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, “যে কোনো
উন্নয়ন কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিক উন্নয়ন কতটা হচ্ছে তা দেখা। বর্তমান সময়ে অনেক
অগ্রগতি হয়েছে, তা প্রতিটি মানুষের কাছে যাচ্ছে না। কেননা সুশাসন ও আইন প্রয়োগের অভাবে
ক্ষমতার সিন্ডিকেটের কাছে এই অগ্রগতি জিম্মি হয়ে আছে।”
তিনি বলেন, “নারীকে অংশীদার করা ছাড়া
জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব না। এজন্য নারীকে মূলধারায় রাখতে সহায়ক কর্মসূচি ও পদক্ষেপ গ্রহণ
করতে হবে।”
লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার আহ্বানও জানান
মহিলা পরিষদের সভাপতি।