বৃহস্পতিবারের
ভাষণে জেলেনস্কি মারিউপোলে রুশ বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ নিয়ে কথা বলেন এবং মস্কোর বিরুদ্ধে
লড়তে এথেন্সের সহযোগিতা চান বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ভাষণের
এক পর্যায়ে জেলেনস্কি এক যোদ্ধার পাঠানো একটি ভিডিওবার্তা দেখান, যেখানে এক ব্যক্তি
নিজেকে ইউক্রেইনের ন্যাশনাল গার্ডের অংশ কট্টর-ডানপন্থি মিলিশিয়া আজভ ব্যাটেলিয়নের
সদস্য বলে পরিচয় দেন।
“গ্রিক বংশোদ্ভূত হিসেবে আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে বলছি।
আমি মিখাইল, আমার দাদা নাৎসিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল, আমি এখন ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষায়
আজভ বাহিনীর হয়ে লড়ছি,” বলেন ওই ব্যক্তি।
গ্রিসের
রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিসের আমন্ত্রণে পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়া
জেলেনস্কিকে আইনপ্রণেতারা দাঁড়িয়ে সম্মান জানালেও আজভ ব্যাটেলিয়নের সদস্যের ভিডিওবার্তা
ওই ভাষণের আবেদন কমিয়ে দিয়েছে বলে মত অনেকের।
সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী হাজার হাজার গ্রিক নাগরিক জেলেনস্কিকে আজভ যোদ্ধার ওই ভিডিওর
জন্য ধুয়ে দিয়েছেন; গ্রিসের বামপন্থি দলগুলো ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে।
এথেন্সের
সমর্থন আরও পোক্ত করতেই জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার মারিউপোলে লড়া গ্রিক বংশোদ্ভূত ওই সেনার
ভিডিওবার্তা দেখান বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু ওই যোদ্ধা আজভ ব্যাটেলিয়নের সদস্য হওয়ায়
বাধে গোল।
ইউক্রেইনের
বন্দরনগরী মারিউপোলো হাজার হাজার গ্রিক বংশোদ্ভূতের বাস।
জেলেনস্কির
ভাষণের পরপরই টুইটারে গ্রিসের বামপন্থি সিরিজা পার্টির শীর্ষ নেতা অ্যালেক্সিস সিপারাস
লিখেছেন, “ইউক্রেইনের জনগণের সঙ্গে সংহতি, কিন্তু নাৎসিরা পার্লামেন্টে
কথা বলতে পারে না।”
তার
এই টুইট মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিন হাজার ৯০০-র বেশি লাইকও পায়।
পরে
গ্রিসের সরকারের এক মুখপাত্রও আজভ ব্যাটেলিয়নের সদস্যের ওই বার্তা দেখানোকে ‘ভুল ও অনুপযুক্ত’ অ্যাখ্যা দেন।
গত
২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেইনকে ‘নিরস্ত্রীকরণ’ ও ‘নাৎসিমুক্ত’ করতে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ নামে। পশ্চিমারা একে বিনা উসকানিতে সার্বভৌম একটি দেশে হামলা বলে অভিহিত
করছে।
এথেন্সের
ইউক্রেইন দূতাবাস বলছে, ২০১৪ সালে কট্টর ডানপন্থি গোষ্ঠী হিসেবে যাত্রা শুরু করা আজভ
রেজিমেন্ট বদলে গেছে এবং এরপরই তাদেরকে ইউক্রেইনের ন্যাশনাল গার্ডে যুক্ত করা হয়েছে।
“বহু বছর ধরে রাশিয়া গ্রিকদের মনোজগতে আজভ রেজিমেন্ট
একটা স্বতন্ত্র আধাসামরিক ইউনিট হিসেবে মারিউপোলে সক্রিয়- এটা ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা
করেছে। নাৎসিদের সেসব কার্যকলাপের সঙ্গে এই ভিডিও কোনো যোগ নেই। রাশিয়া আমাদের ভূমি
ও জনগণের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে,” বলেছে তারা।