ক্যাটাগরি

নতুন ইসি নাটক করেই যাচ্ছে: ফখরুল

শুক্রবার গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের
কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সিভিল সোসাইটিকে ডাকছে, সাংবাদিকদের
ডাকছে। তাদেরকে ডেকে খুব সুন্দর কথা বলছেন।

“নতুন প্রধান নির্বাচন
কমিশনার যিনি, উনি সুন্দর বাংলা বলেন। কথা বলার ভঙ্গিও সুন্দর। আগের ভদ্রলোক তো
ছিলেন,… কথাই ভিন্নভাবে বলতেন। এখনকারজন চমৎকার কথা বলেন এবং বলে মানুষকে
বিমোহিত করার চেষ্টা করেন।”

তবে এসব গুণকে ‘ভয়াবহ’ হিসেবে বর্ণনা করে ফখরুল বলেন, “এই নাটকগুলো করা হচ্ছে। এই
নাটকগুলো করে তারা আবার আরেক নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। যে নির্বাচনে তারা আগের
মতই জোর করে এবং বিভিন্ন কৌশলে…।”

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “এবার হয়ত আগের মত
নির্বাচন হবে না। কোন ধরনের নির্বাচন হবে? আগে তো আগের রাত্রে নির্বাচন হয়ে গেছে।
এখন কি সাত দিন আগে নির্বাচন হয়ে যাবে কিনা জানি না।”

নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের
নেতাদের ‘দ্রুত সাজা দিতে’ সরকার সেল গঠন করেছে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।

“এটা এখন সারা দেশেই
কিন্তু চলছে। আমরা শুনেছি যে, তালিকা তৈরি করেছে সরকার। সেই তালিকা ধরে বিভিন্ন
জেলায় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা আছে এই মামলাগুলো দ্রুত শেষ করার
জন্য একটা সেল তৈরি করে দেওয়া হয়েছে, এই সেল তৈরি করে দিয়ে অতি দ্রুত মামলাগুলো
শেষ করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

২০১৩ সালে মুগদা থানার
একটি মামলার কথা তুলে ধরে এই বিএনপি নেতা বলেন, “এটা মিথ্যা গায়েবি মামলা। এখন
একজন মানুষকে একই ঘটনায় দুটা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। মুগাদা থানার বিস্ফোরক
মামলায় ৩৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। এখানে ৩২ জন খালাস পেয়েছেন। আর সাতজনকে
দুই বছর তিন মাস/দুই বছর এক মাস… এভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে।”

বিচার বিভাগ
স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এর প্রমাণ হচ্ছে এই মুগদা
থানার মামলাটা। যেখানে কোনো কিছু নাই, নাথিং।

“আমার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো
আছে, সেই মামলাগুলোতে কী আছে? একটা হচ্ছে আমি ময়লার গাড়ি পোড়াচ্ছি, তারপর আপনার
সিটি করপোরেশনের গাড়ি। আমার বিরুদ্ধে আছে সেক্রেটারিয়েটের ভেতরে মোটর সাইকেলের
পেছনে গিয়ে বোমা মেরেছি …।”

সরকার বিরোধীদলকে ‘পুরোপুরি
নির্মূল করতে’ কাজ করছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আমাদের প্রশ্ন যে
জায়গায়, রাজনৈতিক প্রশ্ন। সেটা হচ্ছে, সরকার মুখে বলছে গণতন্ত্রের কথা, নির্বাচনের
কথা। আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা গলায় ফেনা তুলে ফেলছেন যে সুষ্ঠু নির্বাচন,
অত্যন্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন তৈরি করা হয়েছে।”

সাংবাদিকদের উদ্দেশে
ফখরুল বলেন, “আপনারা সাংবাদিকরাও কম ভুক্তভোগী নন। ইতোমধ্যে আপনাদের অনেকেই নিহত
হয়েছেন, মারা গেছেন। অনেককে জেলে যেতে হয়েছে সত্য কথা লেখার জন্যে। এখানে ডিজিটাল
সিকিউরিটি আইন করা হয়েছে। এখন গণমাধ্যম কর্মী আইন করতে যাচ্ছে। আমাদের তথ্যমন্ত্রী
সাহেব উনি বলছেন নাকি এটা রিভিউ করা হবে।

“রিভিউ করে কী করবেন
সেটা তো আমরা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ক্ষেত্রে দেখেছি। যার ফলে এটা কোনো মতেই
গণতন্ত্রের নিরাপদ দেশ নয়, এটা মানুষের বিকাশের জন্য নিরাপদ দেশ নয়, এই দেশ এখন
সম্পূর্ণভাবে একনায়কতন্ত্র, কর্তৃত্ববাদী, এককথায় বলতে গেলে একটা ফ্যাসিবাদী
সরকারের হাতে পড়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, সদস্য ইশরাক হোসেনসহ অন্য নেতার্কমীদের
মুক্তির দাবি জানান ফখরুল।

অন্যদের মধ্যে ঢাকা
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম আহবায়ক নবী উল্লাহ নবী, ইউনুস
মৃধা, মোশাররফ হোসেন খোকন, আবদুস সাত্তার, এসকে সেকান্দার, হারুনুর রশীদ, মুনির
হোসেন চেয়ারম্যানম, আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান ফয়েজ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত
ছিলেন।