শুক্রবার পুতিনের দুই মেয়ে মারিয়া ভোরোনৎসোভা এবং কাতেরিনা তিখোনোভার সম্পদ জব্দ এবং ভ্রমণ নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্যের বরিস জনসন সরকার।
এর আগে ইউক্রেইনের বুচা শহরে রুশ বাহিনীর নৃশংসতার চিত্র সামনে আসার পর গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত সর্বশেষ দফা নিষেধাজ্ঞার নিশানা হন মারিয়া এবং কাতেরিনা।
পাশাপাশি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের মেয়ের ওপরও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যুক্তরাজ্যও একইভাবে ল্যাভরভের মেয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেইন, কমনওয়েলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) ল্যাভরভের মেয়ের ভ্রমণ নিষিদ্ধ এবং সম্পদ জব্দের ঘোষণা দিয়েছে।
যুক্তরাজ্য সরকারের হিসাবমতে, সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে দেশটি আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপের সঙ্গে সমন্বিতভাবে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের ২৭হাজার ৫শ’ কোটি পাউন্ডের সমর তহবিল জব্দ করেছে।
ইউক্রেইনে পুতিনের যুদ্ধ চালানোর তহবিল আটকে যাওয়ায় রাশিয়া এখন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন পরবর্তী সবচেয়ে গভীর অর্থনৈতিক মন্দায় পড়তে চলেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্য।
রাশিয়া ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরু করেছে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে। তখন থেকেই দেশটি একের পর এক পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ছে। ইউক্রেইনে রুশ বাহিনীর যুদ্ধ এবং নৃশংসতা যত বাড়ছে ততই রাশিয়ার ওপর আরও নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ হচ্ছে।
ছবি: রয়টার্স
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) শুক্রবার পঞ্চম দফায় রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর মধ্যে আছে কয়লা, কাঠ, রাসায়নিক দ্রব্য এমনকী অন্যান্য জিনিস আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞাও।
এই নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার অনেক জাহাজ এবং ট্রাক ইইউ দেশগুলোতে ঢুকতেও পারবে না। ফলে ব্যাহত হবে বাণিজ্য। রাশিয়ার ভিটিবিসহ চারটি ব্যাংকের সঙ্গে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে লেনদেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, কয়লা আমদানির ওপর ইইউ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর হবে অগাস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। আর নতুন কোনও চুক্তি সই বন্ধ হয়ে যাবে শুক্রবার থেকেই।
কয়লা আমদানিতে যেসব চুক্তি ইতোমধ্যেই আছে, সেগুলো শেষ হয়ে যাবে অগাস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে। সেই পর্যন্ত রাশিয়া কয়লা রপ্তানি থেকে পেমেন্ট পাবে।
ইইউ কমিশন বলছে, কেবলমাত্র কয়লা নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে রাশিয়া বছরে ৮শ’ কোটি ইউরোর রাজস্ব খোয়াবে। তাছাড়া, কাঠ, রাবার, সারসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি নিষিদ্ধের কারণে রাশিয়ার ক্ষতি হবে বছরে ৫৫০ কোটি ইউরো।
ইইউ এর শীর্ষ কূটনীতিক জোসেফ বরেল এক বিবৃতিতে বলেছেন,“ইউক্রেইনের বুচা এবং অন্যান্য শহরে রুশ বাহিনী যে নৃশংস কর্মকাণ্ড চালিয়েছে তার জেরেই রাশিয়ার ওপর সর্বশেষ এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।”
তবে রাশিয়া পশ্চিমাদের এমন অভিযোগ নাকচ করে বলেছে, রুশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতেই এমন ভুয়া অভিযোগ করা হচ্ছে।