শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চারটি ইউনিয়ন নিয়ে নবগঠিত দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা তো কথায় কথায় বিদেশিদের কাছে দৌড় দেয়,
কোনো কিছু হলেই বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের ডেকে কথা বলে।
“এমনকি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব নিজে চিঠি লিখেছিলেন, কংগ্রেসম্যানদের কাছে বাংলাদেশকে সাহায্য বন্ধ করার জন্য। তাদের নেত্রী খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে যাতে সাহায্য বন্ধ করে দেয়, বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা যাতে বাতিল করে- এজন্য চিঠি লিখেছিলেন।”
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নিজেদের ‘অপকর্ম’ থেকে রেহাই পেতে এবং বিএনপিকে ‘নির্বাচনে আনতে’ সরকার বিদেশিদের কাছে ‘ধরনা দিচ্ছে’। শনিবার একই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
রাঙ্গুনিয়ায় হাছান মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের ভিত জনগণের মধ্যে। এখানে কাউকে বিদেশিরা ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে না।
“আমরা জনগণের ক্ষমতায় বলীয়ান, আমরা জনগণের ক্ষমতাতে বিশ্বাস করি। বিদেশিদের কাছে ক্ষণে ক্ষণে দৌড় দেয় বিএনপি এবং তাদের মিত্ররা।”
বেগম খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা ‘বানাতে গিয়ে’ বিএনপি মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পাল্টিয়ে ফেলেন কিনা- এমন শঙ্কা প্রকাশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন,
“সেই শঙ্কার মধ্যেই আছি মির্জা ফখরুল কখন আবার কখন রাজাকারদের মুক্তিযোদ্ধা বলে বসেন। কখন যে বলেন, রাজাকাররাও আসলে মুক্তিযোদ্ধা, কারণ তারা পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন। উনার কাছে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞাটা কী,
আমি জানি না।”
এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন,
“বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, তিনি মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ক্যান্টনমেন্টেই পাকিস্তানিদের আতিথেয়তায় ছিলেন। … এখন হঠাৎ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আবিষ্কার করলেন খালেদা জিয়া নাকি নারী মুক্তিযোদ্ধা!
“মির্জা ফখরুল এই কথা বলার পর,
পুলিশের আইজি এবং ঢাকার পুলিশ কমিশনার যখন সমালোচনা করলেন, তখন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বিএনপি’র অন্যান্য নেতারা পুলিশের আইজি এবং ঢাকার পুলিশ কমিশনারের অনেক সমালোচনা করলেন।”
ফখরুলের প্রতি প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “জিয়াউর রহমান দেশের কোন প্রচলিত আইন বলে সেনাবাহিনী প্রধান হয়ে, সেনাবাহিনীর ড্রেস পরে,
রাজনীতি করেছিলেন? বিএনপি গঠন করেছিলেন এবং রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন?
“জিয়াউর রহমান সাহেব যদি সেনাবাহিনী প্রধান হয়ে দল করতে পারে, রাজনীতি করতে পারে, আবার রাষ্ট্রপতিও হয়ে যেতে পারেন; তাহলে পুলিশের আইজি এবং ডিএমপি কমিশনার তাদের উদ্ভট কথার প্রতিউত্তরে যদি কিছু বলে থাকেন, সেটি যথার্থই বলেছেন। একটি অসত্য উদ্ভট কথার জবাবে প্রত্যেক নাগরিকেরই বলার অধিকার আছে।”
সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক উস্কানির বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন,
“আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য অপচেষ্টা হয়,
সেগুলো আমরা সবসময় কঠোর হস্তে দমন করেছি।
“কে হিজাব পরবে কিংবা পরবে না,
সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সুতরাং এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি করার কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে, সেটি আমরা কঠোর হস্তে দমন করবো।”
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হকসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।