মুন্সীগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক অতিরিক্ত জেলা জজ মোতাহারাত আক্তার ভূইয়া রোববার জামিন মঞ্জুরের পর বিকাল ৫টার পরে তিনি জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার আবুল বাশার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সোয়া ৪টার দিকে জামিননামার কাগজটা হাতে পাই। এরপর যাবতীয় ফরমালিটি শেষে রবিবার বিকাল ৫টা ২ মিনিটে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।”
হৃদয়ের আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ কারাগারের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, “আদালত থেকে জামিনের কাগজপত্র যাচাই শেষে কারা কর্তৃপক্ষ শিক্ষককে মুক্তি দিয়েছেন।”
কারাগার থেকে বেরিয়ে আপ্লুত হৃদয় মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, তার বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে সেটা মিথ্যা।
গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণির একটি অনির্ধারিত ক্লাসে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করছিলেন হৃদয় মণ্ডল। সেখানে একজন ছাত্র বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের তুলনা করে কিছু প্রশ্ন করে। হৃদয় মণ্ডল সেগুলোর জবাব দেন।
ক্লাসের এক ছাত্র ওই আলোচনা মোবাইলে রেকর্ড করে এবং তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। দুদিন পর কিছু ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন মিলে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
ওই রাতেই স্কুলের অফিস সহকারী আসাদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা করলে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে, যা নানামুখী আলোচনার জন্ম দেয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, হৃদয় মণ্ডলকে ‘ফাঁসানোর জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে’ একটি মহল
শিক্ষাবিদ, অধিকারকর্মী, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এর প্রতিবাদে সরব হয়।
২৮ মার্চ মুন্সীগঞ্জের বিচারিক হাকিম আদালতে জামিন আবেদন করেন হৃদয়, তা নাকচ করা হয়। এরপর সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতও তার জামিন নাকচ করে।
আরও পড়ুন:
১৯ দিন পর জামিন পেলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল
শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল গ্রেপ্তার: ঘটনার পূর্বাপর
শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলার ধারা ও জামিন না হওয়ায় প্রশ্ন
শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল কারাগারে: ‘রাষ্ট্র কি যুক্তি দিয়ে চলছে?’
হৃদয় চন্দ্র মুক্তি না পেলে ‘আমাকেও গ্রেপ্তার করা হোক’: জাফর ইকবাল
জজ আদালতেও জামিন মেলেনি বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের