কারণ দুধ ঘুমের জন্য উপকারী। আর দেহের
জন্য দরকার পর্যাপ্ত ঘুম।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘মায়ো ক্লিনিক’য়ের তথ্যানুসারে,
প্রাপ্তবয়স্কদের রাতে সাত ঘন্টা বা এর বেশি ঘুমের প্রয়োজন হয়। নিয়মিত রাতে সাত
ঘণ্টার কম ঘুমের সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি, ‘বডি মাস ইনডেক্স’ বা বিএমআই ৩০ বা তার বেশি হতে
পারে।
ফলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ,
স্ট্রোক, বিষণ্নতা ইত্যাদি রোগ দেখা দিতে পারে।
ঘুমানোর আগে রাতে কী খাওয়া বা পান করা
হচ্ছে তা ঘুমের মান উন্নত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
দুধ
অনেকেই রাতে ঘুমানোর আগে দুধ পান করেন।
এটা তাদের জন্য বেশ আরামদায়ক বলেও জানা যায়। ঘুমানোর আগে কুসুম গরম, গরম কোকোয়া যুক্ত
অথবা হলুদ মেশানো দুধ পান করা যায়।
নিউ ইয়র্ক’য়ের পুষ্টিবিদ টবি অ্যামিড
ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “রাতে দুধ পান আরামদায়ক ও মানসিক
চাপ কমায়। যদিও এর কোনো বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে এতে থাকা পুষ্টি উপাদান
রাতে ঘুমানোর আগে গ্রহণ করা শরীরকে প্রশান্ত করে। ফলে ঘুম তাড়াতাড়ি পায়।”
টেক্সাসের আরেক পুষ্টিবিদ এমি গুডসন বলেন
“দুধ উচ্চ মানের প্রোটিন সমৃদ্ধ। অর্থাৎ এটা অ্যামিনো অ্যাসিডের ভালো উৎস। দুধের প্রাথমিক
প্রোটিন যৌগ ‘ক্যাসিন’ থাকে (৮০ শতাংশ দুধের প্রোটিন), যা ধীরে হজম হয়। ফলে অনেকক্ষণ
পেট ভরা রাখে আর সহজে ঘুম আসে।”
দুধ পান ঘুমের ব্যঘাত কমায়। এতে আছে ট্রিপটোফ্যান,
যা ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন নিঃসরণ করে।
রাতে ঘুমেনোর আগে এক গ্লাস দুধ পান কেবল
পেট ভরা রাখে না বরং তা ১৩টি অত্যাবশ্যক পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
ক্যামোমাইল চা
ক্যামোমাইল ডেইজি ফুলের মতোই ‘অ্যাস্টেরেসিয়া’
ভেষজ পরিবার বর্গের অন্তর্গত যা বহু বছর ধরেই প্রাকৃতিকভাবে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ,
প্রদাহ হ্রাস, ঠাণ্ডার সমস্যা এবং অনিদ্রা দূর করতে সহায়তা করে।
গুডসনের মতে, “ক্যামোমাইল নির্যাস যুগে
যুগে প্রশান্তিদায়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যামোমাইল চা
ঘুমের মান উন্নত করে এবং ঘুমের অভাবে হওয়া শারীরিক সমস্যার লক্ষণ কমাতে সহায়তা করে।
এছাড়াও এর নির্যাস অনিদ্রা দূরে প্রভাব রাখে বলে জানা যায় অনেক গবেষণা থেকে।”
ল্যাভেন্ডার চা
ল্যাভেন্ডার তার সুগন্ধের জন্য বিশ্ব
জুড়ে জনপ্রিয়। এর সুগন্ধ মন ভালো রাখে।
‘ওয়ার্ল্ডভিউস অন এভিডেন্স-বেইজড নার্সিং’
জার্নালে প্রকাশিত সমীক্ষার উদ্ধৃতি দিয়ে, একই প্রতিবেদনে জানানো হয়, ল্যাভেন্ডার চা
হতাশা এবং দুর্বলতা বিশেষত, প্রসবের পরে নারীদের দুর্বলতা কাটাতে ভূমিকা রাখে।
ঘুমের গুণগতমান, ক্লান্তি ও বিষণ্নতা
দূর করতে ল্যাভেন্ডার চায়ের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করার জন্য এবং প্রসবোত্তর সময়ের
প্রথম দিকে মাতৃ-শিশুর সংযুক্তির উন্নতিতে এই গবেষণা তাইওয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স কাউন্সিল’য়ের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, এর ফলে মহিলারা
কম ক্লান্ত ও বিষণ্ন অনুভব করেন। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত গ্রুপের তুলনায় তাদের শিশুর
সঙ্গে সম্পর্ক বেশি উন্নত দেখা যায়।
আরও পড়ুন
নষ্ট দুধের পানি কাজে লাগানোর উপায়