ক্যাটাগরি

ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে নলকূপের উপর, স্নানে গিয়ে মা-ছেলের মৃত্যু

উপজেলার
নতুনপাড়ায় রোববার বেলা ১২টার দিকে হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জামালগঞ্জ থানার ওসি মীর মো.
আব্দুন নাসের জানান।

নিহতরা
হলেন দিরাই উপজেলার নুপুর তালুকদারের স্ত্রী ঝুমা সরকার (৩৫) ও তার ছেলে অন্তর
সরকার (৩)। ঝুমা বাবার বাড়ি জামালগঞ্জের নতুনপাড়ায় থেকে একটি বেসরকারি উন্নয়ন
সংস্থার (এনজিও) কাজ করতেন।

এ সময়
গুরুতর আহত সাত বছরের মেয়ে পূজা সরকারকে সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পূজা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

নিহতের
প্রতিবেশী তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ বলেন, “শোরগোল শুনে বাসা থেকে বের হয়ে এক নারীকে নলকূপের
পাশে তার সন্তানসহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখি। তখন তার শরীরে আগুন জ্বলছিল। পাশেই আরেক
সন্তান মাটিতে ছটফট করছিল।

“নলকূপের
ওপর পল্লীবিদ্যুতের ছেঁড়া লাইন ঝুলছিল। লাইনে বিদ্যুতের সংযোগ থাকায় কেউ এগিয়ে
আসছিল না। স্থানীয় পল্লীবিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টদেরকে মোবাইল ফোনে কল দিলেও কেউ কল ধরেননি।
পরে সুনামগঞ্জ অফিসের জোনাল ম্যানেজারকে জানালে দ্রুত লাইন বন্ধ করা হয়।”

পূজা
সরকারকে উদ্ধার করে প্রথমে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পরে সেখান
থেকে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

নিহতের
বাবা গৌরাঙ্গ সরকার বলেন, ”আমার মেয়ে তার ছেলে ও মেয়েকে স্নান করাতে নলকূপে গিয়েছিল।
শনিবার ভোরে কালবৈশাখী ঝড় হয়। ঝড়ে নতুনপাড়ার পল্লীবিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে নিচে পরে যায়।
ভোরে লাইনটি ছিঁড়লেও দুপুর পর্যন্ত কেউ মেরামত করতে আসেনি এবং ছেঁড়া লাইনে বিদ্যুৎ
ছিল।  তাতেই আমার মেয়ে আর নাতি স্পৃষ্ট হয়ে
মারা গেছে।

তাদের
মৃত্যুর জন্য পল্লীবিদ্যুতকে দায়ী করেন গৌরাঙ্গ।

পরিবার
ও এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পল্লীবিদ্যুতের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন
করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ পল্লীবিদ্যুতের মহাব্যাপস্থাপক সুজিত কুমার দাস।

তিনি বলেন,
”বিদ্যুতায়িত হয়ে মা ও ছেলের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠায় আমরা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
করেছি। কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।“

জামালগঞ্জ
থানার ওসি আব্দুন নাসের জানান, পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য
সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।