দেহ আর্দ্র রাখতে পানি পানের বিকল্প নেই।
তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলেছে পানি হৃদপিণ্ড ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
মার্চের শেষের দিকে ‘ইউরোপিয়ান হার্ট
জার্নাল’য়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেল্থ’স (এনআইএইচ’স) ন্যাশনাল হার্ট,
লাং অ্যান্ড ব্লাড ইন্সটিটিউট’য়ের করা এক গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়।
সেখানে গবেষকরা ১১ হাজারের বেশি মধ্যবয়সি
প্রাপ্ত বয়স্কদের একটি দলের দিকে ২৫ বছরের বেশি সময় পর্যবেক্ষণ করেন। তারা অংশগ্রহণকারীদের
সিরাম সোডিয়ামের (রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ কারণ এটি পানির পরিমাণের সঙ্গে সম্পর্কিত)
সঙ্গে হৃদযন্ত্রের ঝুঁকির সম্পর্কে তুলনা করে দেখেছেন।
তারা দেখেছেন যে হাইপোহাইড্রেশন – দেহের
পানির ঘাটতি হলে আর তা পূরণ না করলে স্বাস্ত্যঝুঁকি বাড়ায়।
বিপরীতভাবে, গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে
তাদের ফলাফলগুলো থেকে জানা যায়, নিজেকে ভালো মতো আর্দ্র রাখলে হৃদস্পন্দন বা ‘হার্ট
ফেইল’য়ের ঝুঁকি কমাতে পারে। আর হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা হ্রাসের ঝুঁকি কমায়।
এনএইচএলবিআই-এর গবেষক বিজ্ঞানী ডা. নাতাশা
দিমিত্রিভা বলেন এই বিষয়ে ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “হৃদপিণ্ডের
কার্যকারিতায় পানির ভূমিকা কতটুকু এবং ঠিক কীভাবে ‘হাইপোহাইড্রেশন’ হৃদরোগ হয় তার
সম্পূর্ণ ব্যাখ্যার জন্য আরও অধ্যয়নের প্রয়োজন রয়েছে।”
“তবে ইতোমধ্যে আমরা বুঝতে পারি যে, পর্যাপ্ত
পানি পানের অভাবে শরীর যখন বাড়তি তরল সংরক্ষণের চেষ্টা করে তখন হৃদপিণ্ডের ওপর এই ধরনের
প্রতিকূল প্রভাবগুলির সৃষ্টি হয়,” বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, “যখন আমরা পর্যাপ্তভাবে
আর্দ্র থাকি না, দেহ তখন পানি সংরক্ষণের চেষ্টা করে। ফলে শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব
ফেলে। আর হৃদপিণ্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”
তিনি পরামর্শ দেন যে, “ভালোভাবে আর্দ্র
থাকার সর্বোত্তম উপায় হল পানি পান করার পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং নিয়মিতভাবে
সঠিক পরিমাণে পান করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা।”
“বেশিরভাগ মানুষই তরল গ্রহণের পরিমাণের
প্রতি নজর রাখে না এবং সম্পূর্ণরূপে তৃষ্ণার অনুভূতির ওপর নির্ভর করে। বয়স বাড়ার
সঙ্গে তৃষ্ণার অনুভূতিরও অবনতি ঘটে, যা বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে রোগ বৃদ্ধিতে অবদান
রাখে।”
তাই সবসময় সঠিক পরিমাণ পানি পানে সচেতন
থাকা প্রয়োজন।
‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’য়ের পরামর্শ
হল, বয়স পঞ্চাশ পেরুলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন