ওই অঞ্চলে রাশিয়ার বাহিনীগুলো বন্দিদের নির্যাতন ও মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে, এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির ন্যায়পাল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তারা মারিউপোলে ব্যাপক ধ্বংসের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলেও কথিত ওই অপরাধ বা কৌলশগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহরটিতে কতোজন নিহত হয়েছে তার হিসাব তারা যাচাই করতে পারেনি।
মারিউপোলের অবস্থান রাশিয়ার ভূখণ্ডভুক্ত ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেইনে রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা এলাকাগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে।
সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টের সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভিডিও ভাষণে বিস্তারিত না জানিয়ে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, “মারিউপোল ধ্বংস হয়ে গেছে, সেখানে লাখো মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তারপরও রুশরা তাদের আক্রমণ বন্ধ করেনি।”
তার দাবি করা এ সংখ্যা যদি নিশ্চিত হয়, তাহলে এ পর্যন্ত এটিই হবে ইউক্রেইনের একটি স্থানে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনা।
রাশিয়ার স্বীকৃতি পাওয়া স্বঘোষিত দোনেৎস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের প্রধান দেনিস পুশিলিন সোমবার বার্তা সংস্থা আরআইএকে বলেছেন, মারিউপোলে ৫ হাজারের কিছু বেশি মানুষ নিহত হয়েছে আর এ জন্য ইউক্রেইনীয় বাহিনীগুলো দায়ী।
মারিউপোলের মেয়রের একজন সহযোগী সোমবার টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, শহরটি ছাড়তে থাকা মানুষের সংখ্যা কমে গেছে কারণ যাওয়ার আগে রাশিয়ার বাহিনীগুলোর করা তল্লাশি ও শনাক্তকরণ পরীক্ষার গতি কমে গেছে।
শহর ছাড়ার সময় মারিউপোলের বেসামরিক এক বাসিন্দারা নথি পরীক্ষা করছে রুশপন্থি বাহিনীর এক সেনা। ছবি: রয়টার্স
তিনি জানান, রুশ বাহিনীগুলোর পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায় ১০ হাজার লোক অপেক্ষা করছে।
শহরটি ছাড়তে থাকা বেসামরিকদের সঙ্গে মিশে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করছে কি না, তার ওপর কড়া নজর রাখছে শহরটি অবরুদ্ধ করে রাখা রুশ বাহিনী।
তবে এ বিষয়ে মস্কোর দিক থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে বেসামরিকদের শহর ছাড়তে ইউক্রেইন বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিল তারা।
ইউক্রেইনের মানবাধিকার ন্যায়পাল লুদমিলা দেনিসোভা মারিউপোলের নগর প্রশাসনের দেওয়া পরিসংখ্যান উদ্ধৃত করে বলেছেন, মারিউপোলের ৩৩ হাজার বাসিন্দাকে রাশিয়া অথবা রাশিয়ার সমর্থনপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ‘নির্বাসিত’ করা হয়েছে।
রোববার রাশিয়া জানিয়েছে, তারা এ পর্যন্ত ইউক্রেইন থেকে ৭ লাখ ২৩ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে। ইউক্রেইনে চালানো ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’ তারা বেসামরিকদের ওপর হামলা করছে না বলেও দাবি করেছে।
এক টেলিগ্রাম পোস্টে দেনিসোভা বলেন, “প্রত্যক্ষদর্শীদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার ন্যাশনাল গার্ড ও চেচেন ‘কাদিরোভাইট’ ইউনিটগুলো অবৈধ গ্রেপ্তার, বন্দিদের নির্যাতন এবং ইউক্রেইনীয়পন্থি যে কোনো অবস্থানের জন্য বন্দিদের মৃত্যুদণ্ড দিচ্ছে।”
কথিত এই নির্যাতনের বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে ক্রেমলিন তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।