আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় মঙ্গলবার রাতে কোয়ার্টার-ফাইনালের ফিরতি লেগের ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছে। ঘরের মাঠে প্রথম লেগে ১-০ ব্যবধানে জেতা ভিয়ারিয়াল ২-১ গোলের অগ্রগামিতায় নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতার শেষ চারে পা রেখেছে।
ম্যাচ জুড়ে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণে আধিপত্য করে বায়ার্ন। কিন্তু গোলের জন্য তাদের ২৩ শটের কেবল চারটি ছিল লক্ষ্যে। আর ভিয়ারিয়ালের চার শটের মাত্র একটি লক্ষ্যে, সেটিও ৮৮তম মিনিটে! তাতেই লেখা হয়ে যায় ইতিহাস।
এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে থেমে গেল বায়ার্ন মিউনিখের পথচলা।
শুরু থেকে পজেশনে পিছিয়ে থাকলেও ষষ্ঠ মিনিটে গোলের উদ্দেশ্যে ম্যাচের প্রথম শট নেয় ভিয়ারিয়াল। ডি-বক্সের বাইরে থেকে জেরার্দ মরেনোর প্রচেষ্টা বাইরে দিয়ে যায়।
গোলের জন্য মরিয়া বায়ার্ন ষোড়শ মিনিটে তৈরি করে সুযোগ। লেরয় সানের ক্রসে ডি-বক্সে হেডের চেষ্টায় লাফিয়ে বলের নাগাল পাননি জসুয়া কিমিখ।
২৯তম মিনিটে লেয়ন গোরেটস্কার ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে জামাল মুসিয়ালার হেড ঠেকান ভিয়ারিয়াল গোলরক্ষক জেরোনিমো রুলি। প্রথমার্ধে বায়ার্নের আট শটের এই একটিই ছিল কেবল লক্ষ্যে।
বিরতির আগে দুটি সুযোগ পায় সফরকারীরা। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি প্রথম লেগের একমাত্র গোলদাতা দানজুমা। যদিও অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। আর দুরূহ কোণ থেকে মরেনোর শট পাশের জালে লাগে।
দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হারান বায়ার্নের উপামেকানো। ডি-বক্সে সানের কাটব্যাক ফাঁকায় পেয়ে উড়িয়ে মারেন এই ফরাসি ডিফেন্ডার।
পরক্ষণেই এগিয়ে যায় বায়ার্ন। প্রথমার্ধে নিজের ছায়া হয়ে থাকা লেভানদোভস্কি ম্যাচে নিজের প্রথম শটে করেন গোল। টমাস মুলারের পাস ডি-বক্সে পেয়ে পোলিশ ফরোয়ার্ডের শটে বল পাও তরেসের দুই পায়ের মাঝ দিয়ে গিয়ে পোষ্টে লেগে জালে জড়ায়।
ইউরোপ সেরার মঞ্চে চলতি আসরে ১০ ম্যাচে লেভানদোভস্কির গোল হলো ১৩টি, সব আসর মিলিয়ে ১০৬ ম্যাচে ৮৬টি। তার চেয়ে বেশি গোল আছে কেবল লিওনেল মেসি (১২৫) ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর (১৪০)।
মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪১ ম্যাচে গত দুইবারের ফিফা বর্ষসেরা এই খেলোয়াড়ের গোল হলো ৪৭টি।
দুই লেগ মিলিয়ে তখন ১-১ সমতা। দারুণ কিছুর আশায় স্বাগতিক সমর্থকরা।
৭২তম মিনিটে দলকে শেষ চারের পথে এগিয়ে নেওয়ার বড় সুযোগ হাতছাড়া করেন মুলার। সানের ক্রসে কাছ থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি অভিজ্ঞ জার্মান ফরোয়ার্ড।
ম্যাচ যাচ্ছিল অতিরিক্ত সময়ের দিকে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের দুই মিনিট বাকি থাকতে পাল্টা আক্রমণে বায়ার্নের সমর্থকদের স্তব্ধ করে দেয় ভিয়ারিয়াল।
জিওভানি লো সেলসো বাঁ দিকে পাস দেন মরেনোকে। তার পাস ডি-বক্সে পেয়ে মানুয়েল নয়ারকে পরাস্ত করেন মিনিট চারেক আগে বদলি নামা সামুয়েল চুকওয়েজে। উল্লাসে ফেটে পড়ে সফরকারীরা।
শেষ ষোলোয় ইউভেন্তুসকে হারানোর পর এবার ছয়বারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের বিদায় করে আরও এগিয়ে গেল ভিয়ারিয়াল। স্বপ্নের পথচলা বুঝি একেই বলে!
সেমি-ফাইনালে লিভারপুল অথবা বেনফিকার মুখোমুখি হবে উনাই এমেরির দল।