সোমবার রাতে ভুক্তভোগী নারীকে থানায় ‘ডেকে
নিয়ে’ মামলা গ্রহণ করা হয়। তারপরই গ্রেপ্তার করা হয় এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের
সাধারণ সম্পাদক সাকিব ভূঁইয়াকে।
মঙ্গলবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে
পাঠানো হয় বলে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম জানান। পাশাপাশি এসআই ফরিদুল
আলমকে পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
পরিদর্শক জিয়াউল বলেন, “মামলা সংক্রান্ত
একটি জটিলতার নিয়ে এসআই ফরিদুল আলমকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।”
আশুলিয়ার ঘোষবাগ এলাকার বাসিন্দা সাকিবের
বিরুদ্ধে ২১ মার্চ রাতে থানায় ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দেন এক তৈরি পোশাককর্মী (২৪)। কিন্তু
মামলাটি নথিভুক্ত না করে এসআই ফরিদুল টাকার বিনিময়ে আপস মীমাংসায় বাধ্য করে বলে অভিযোগ
বাদীর।
তৈরি পোশাকর্মী বলেন, তিনি ঘোষবাগ এলাকায়
ভাড়া থেকে একটি কারখানায় কাজ করেন। পরিচয়ের সূত্র ধরে সাকিবের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক
গড়ে উঠে। এ সময়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করা হয়। কিন্তু বিয়ে করার
কথা বললে সাকিব কালক্ষেপণ করে। একপর্যায়ে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে দিয়ে এলাকা
ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও চাপ সৃষ্টি করে।
পোশাকশ্রমিক তখন থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এটি তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই ফরিদুল।
“এসআই ফরিদুল আসামির সঙ্গে আঁতাত করে ২৬
মার্চ স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে থানায় বসেই আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে অভিযোগটি মীমাংসা করতে
বাধ্য করেন। তারা বলেন, মামলায় গেলে অনেক ঝামেলা, অনেক খরচ, তুমি মীমাংসা করে নাও।
সেই টাকা থেকে আমার কাছে বিভিন্ন খরচাপাতির কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে উপস্থিত
লোকজন। আমি ৪০ হাজার টাকা ওই দারোগার টেবিলের ওপর রেখে চলে আসি।”
পোশাকশ্রমিক বলেন, “আমি ওই এলাকাতেই বাস
করছিলাম। কোনো ঝামেলাও ছিল না। সোমবার হঠাৎ করে এসআই ফরিদ আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘বোন
আমার চাকরিটা বাঁচাও। তুমি থানায় এসে একটা স্টেটমেন্ট দিয়ে যাও।’”
“পরে সোমবার রাতে আমাকে থানায় ডেকে নিয়ে
মামলা গ্রহণ করে। আমি যখন মামলা করতে চেয়েছি তখন আমার মামলা নেওয়া হয়নি। আর পরে আমি
যখন সব ভুলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে চেয়েছি তখন আমাকে এই পথে আনা হল। আমাকে হেনস্তা
করা হয়েছে।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই ফরিদুল আলম
বলেন, “আমি কারও কাছ থেকে টাকা নেইনি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিও গ্রেপ্তার হয়েছে।“