লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ এরই মধ্যে দুইজনকে নোটিশ পাঠিয়ে বলেছে, তাদেরকে নির্ধারিত জরিমানার অঙ্ক জানিয়ে আরেকটি নোটিশ দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রীসহ শীর্ষ নেতাদের এই জরিমানা গোনার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে। শীর্ষস্থানীয় পত্রিকাগুলো প্রথম পাতাতেই নানা শিরোনামে এ নিয়ে খবর ছেপেছে।
বুধবার ‘দ্য গার্ডিয়ান’ এর প্রথম পাতায় জনসন ও সুনাকের পাশাপাশি দাাঁড়িয়ে থাকার একটি ছবি দিয়ে খবর ছাপা হয়েছে, যার শিরোনাম: “প্রধানমন্ত্রী: আমি নিজেই নিজের আইন ভেঙেছি, কিন্তু পদত্যাগ করব না।”
আরেক দৈনিক ‘মিরর’ এর প্রথম পাতায় ছাপা সংবাদের শিরোনাম: ‘নেতৃত্ব দিচ্ছেন মিথ্যুক ও আইন ভঙ্গকারীরা’। পত্রিকাটি লিখেছে, এ পর্যন্ত সরকার-সংশ্লিষ্টদের মধ্যে জরিমানার নোটিশ পাঠানোর সংখ্যা লজ্জনকভাবে বেড়ে ‘৫০ জনে’ দাঁড়িয়েছে।
দৈনিক ‘মেট্রো’ প্রথম পাতায় ছাপা সংবাদের শিরোনাম হচ্ছে: ‘ন্যাক্কারজনক ১০ নং পার্টিগেট কেলেঙ্কারি: প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী আইন ভেঙেছেন।”
‘দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস’ লিখেছে: “কোভিড বিধিনিষেধ ভাঙার জন্য জরিমানায় জনসন ও সুনাকের ওপর চাপ বাড়ল।” আরেক দৈনিক ‘আই’ তাদের সংবাদ শিরোনামে লিখেছে: “প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন—এবং জরিমানার মুখে পড়েছেন।”
‘দ্য টাইমস’ এর খবরের শিরোনাম: “লকডাউন পার্টি নিয়ে জরিমানার ঘটনায় পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন জনসন।” ‘দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় শিরোনাম করা হয়েছে: “মানুষের এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করার অধিকার আছে।”
ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
‘দ্য ডেইলি এক্সপ্রেস’ লিখেছে, “প্রধানমন্ত্রী: আমি দুঃখিত, ব্রিটেনের জন্য আমি আরও ভাল কিছু করব।” ওদিকে, ‘দ্য সান’ পত্রিকা লিখেছে, “আমি দুঃখিত- কিন্তু আমার আরও কাজ করার আছে।”
অন্যদিকে, ‘ডেইলি মেইল’ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে সমর্থন দিয়েছে। জনসনের সমালোচকদের উদ্দেশে পত্রিকাটি লিখেছে: “তারা কি জানে না একটা যুদ্ধ চলছে?’ প্রধানমন্ত্রীর সাফাই গেয়ে মেইল আরও লিখেছে: “জনসন ওখানে (পার্টি) মাত্র ৯ মিনিট ছিলেন। আর ক্যারি জনসন ছিলেন ৫ মিনিটেরও কম…”
যুক্তরাজ্যে ২০২০ সালে লকডাউনের মধ্যে মদপানের পার্টিতে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের উপস্থিত থাকার খবরে শোরগোলের মুখে তিনি ক্ষমা চাওয়ার পরই সামনে আসে আরেক পার্টি কেলেঙ্কারির ঘটনা।
২০২১ সালের ১৬ এপ্রিলে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান থাকার সময়ও জনসনের ডাউনিং স্ট্রিটের কার্যালয়ে কর্মীরা আরও দুটো মদের পার্টি করেছিলেন বলে খবর প্রকাশ করে দ্য টেলিগ্রাফ।
ওই সময়ও বদ্ধ জায়গায় জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। প্রিন্স ফিলিপের মৃত্যুতে তখন চলছিল জাতীয় শোক এবং পরেরদিন (১৭ এপ্রিল) ছিল ফিলিপের শেষকৃত্য।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সেই পার্টিতে উপস্থিত না থাকলেও জাতীয় শোক দিবস এবং জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ডাউনিং স্ট্রিটে এমন পার্টির কারণে প্রশ্নের মুখে পড়েন। বার বার ক্ষমা চেয়েও তিনি রেহাই পাননি।
বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি ওঠে। সেসময়ই ঘটনার তদন্ত শুরু করে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ। হোয়াইট হল এবং ডাউনিং স্ট্রিটে লকডাউনের নিয়ম ভঙ্গ করে ১২ টি জনসমাগমের ঘটনার অভিযোগ তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।