বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স।
২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিবেশী ইউক্রেইনে কথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করা রাশিয়ার জন্য এটি আরেকটি সামরিক বিপর্যয় বলে মন্তব্য করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইন্টারফ্যাক্স জানায়, যুদ্ধজাহাজটিতে থাকা গোলাবারুদের বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটি থেকে সব নাবিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিস্ফোরণের জন্য অগ্নিকাণ্ডের একটি ঘটনাকে দায়ী করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত শুরু করার কথা জানিয়েছে তারা।
এর আগে ইউক্রেইনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, দুটি জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র মস্কভায় আঘাত হেনেছে; তবে নিজের বক্তব্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি তিনি।
১২ হাজার ৫০০ হাজার টনের এই যুদ্ধজাহাজটিতে সাধারণত প্রায় ৫০০ জন নাবিক থাকেন।
এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, “ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ক্রুজার মস্কভায় আগুনের কারণে গোলাবারুদ বিস্ফোরিত হয়েছে। জাহাজটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব ক্রুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
এই ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি ইন্টারফ্যাক্স।
মস্কভা ১৯৮৩ সালে রাশিয়ার নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়। এই যুদ্ধজাহাজটিতে ১৬টি জাহাজ বিধ্বংসী ‘ভলকান’ ক্রুইজ ক্ষেপণাস্ত্র আছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা অন্তত ৭০০ কিলোমিটার (৪৪০ মাইল) ।
২০২১ এর এপ্রিলে রাশিয়ার একজন অবসরপ্রাপ্ত অ্যাডমিরাল মস্কভাকে ‘কৃষ্ণসাগরীয় নৌবহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
কিইভ বলছে, যুদ্ধের প্রথমদিকে তাদের কৃষ্ণসাগরীয় দ্বীপ স্নেক আইল্যান্ডে থাকা সীমান্তরক্ষীদের এই মস্কভা থেকেই হুমকি দিয়ে আত্মসর্পণ করার জন্য বলা হয়েছিল, আর এর জবাবে এক ইউক্রেইনীয় রক্ষী বলেছিলেন, “রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ, গো ফা… ইউরসেলফ!”
ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপল বন্দরে নোঙর করা রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যুদ্ধজাহাজ মস্কভার স্যাটেলাইট ছবি। ছবি: রয়টার্স
এরপরই রুশ বাহিনীর হামলায় দ্বীপটিতে থাকা ১৩ সীমান্তরক্ষীর সবার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছিলেন ইউক্রেইনীয় কর্মকর্তারা। কিন্তু পরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, ওই রক্ষীদের মধ্যে কয়েকজন বেঁচে আছেন।
ইউক্রেইনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর ওদেসার আশপাশের অঞ্চলের গভর্নর মাক্সিম মারচেঙ্কো দাবি করেছেন, ইউক্রেইনের তৈরি দুটি জাহাজ বিধ্বংসী নেপচুন ক্রুইজ ক্ষেপণাস্ত্র মস্কভায় আঘাত হেনেছে।
“স্নেক আইল্যান্ডের সীমান্তরক্ষীরা ক্ষেপণাস্ত্রবাহী যুদ্ধজাহাজটিকে যেখানে যেতে বলেছিল মস্কভা ঠিক সেখানেই গিয়েছে, এটি নিশ্চিত,” বলেছেন তিনি।
রয়টার্স জানিয়েছে, এমন দাবি করলেও এর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থিত করতে পারেননি মারচেঙ্কো আর এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য জানানো অনুরোধে ইউক্রেইনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সাড়া দেয়নি।
গত মাসে ইউক্রেইন জানিয়েছিল, তারা আজভ সাগরে ওর্স্ক নামের রাশিয়ার একটি বিশাল ল্যান্ডিং সার্পোট শিপ ধ্বংস করেছে।
তবে ওর্স্কের ক্ষেত্রে কী ঘটেছে তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি মস্কো।
আরও পড়ুন:
মারিউপোলে ‘হাজারেরও বেশি ইউক্রেইনীয় সেনার আত্মসমর্পণ ’
রাশিয়া ফসফরাস বোমা ব্যবহার করছে: জেলেনস্কি
স্নেক আইল্যান্ডের সেই ১৩ ইউক্রেইনীয় সেনা বেঁচে আছেন