বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেছেন, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় আয়োজক
কমিটি এবং সংবাদকর্মীদের সাথে বসে তিনি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তখনই আনুষ্ঠানিক
ঘোষণা দেওয়া হবে।
বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে বৈশাখ মাসের ১২ তারিখ লালদিঘীর ময়দানে হয় এই খেলা।
এই খেলা ঘিরে তিন দিন লালদিঘীর মাঠ ও আশপাশের রাস্তায় কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসে
বৈশাখী মেলা।
করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালের খেলা বা মেলা কোনোটাই হয়নি।
আর এবার লালদীঘি মাঠে ছয় দফা মঞ্চ, বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার টেরাকোটা ও মাঠ সংস্কার
প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের
কথা রয়েছে। তাই বলী খেলা আয়োজনের জন্য এবার মাঠ পাওয়া যাচ্ছে না।
এ পরিস্থিতিতে গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে চলতি বছরের আয়োজন স্থগিত ঘোষণা
করে আবদুল জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা আয়োজক কমিটি।
এরপর বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে আলোচনা শুরু হয়। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এই
আয়োজন অব্যাহত রাখার দাবি ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী আয়োজকদের
সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “জব্বারের বলী খেলা শুধু একটি
খেলা নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য। এমনকি অতীতে ঈদের দিনেও বলী খেলা হয়েছে।
“যেহেতু এবার লালদীঘি মাঠ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই মাঠের কাছেই বিকল্প স্থানে
খেলা আয়োজনের প্রস্তাব করেছি। মেলাও হবে। মেলা হবে আগের জায়গায়।”
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল বলেন, “নগরীর
সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্ট বলী খেলার পক্ষে। কমিটি আমার সাথে মোটামুটি একমত হয়েছে।
তারা আয়োজন নিয়ে ছোটোখাটো কিছু প্রয়োজনের কথা বলেছেন। সেগুলো সমাধান হবে আশা করি।”
মাঠ না পেলে কীভাবে বলী খেলা হবে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, “এখন রমজান মাস।
দিনের বেলা যানজটের কারণে যদি সমস্যা হয়, রাতের বেলায় ফ্লাডলাইটের আলোয় খেলা হতে পারে।
লালদীঘি মাঠের সামনের পেট্রোল পাম্প চত্বরে বা জেলা পরিষদ চত্বরে অস্থায়ী মঞ্চ করে
খেলা আয়োজন করা যেতে পারে।”
শনিবারের বৈঠকেই এর ফয়সালা করতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, “কালই গণমাধ্যমকে
জানিয়ে দেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেলা কমিটির সভাপতি জহর লাল হাজারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে, “মেয়র মহোদয়সহ সংশ্লিষ্টদের সাথে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। চেষ্টা করছি বলী খেলা
ও মেলা দুটোই আয়োজন করার।”
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুব সমাজকে সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে স্থানীয়
আব্দুল জব্বার সওদাগর নগরীর লালদিঘী মাঠে কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। পরে সেই
মল্লযুদ্ধই জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিত হয়। মহামারীর কারণে ২০২০ সালে প্রথমবারের
মত এ আয়োজনে ছেদ পড়ে।
এমনিতে ১২ বৈশাখ দুপুর থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যার আগে শেষ হয় বলী খেলা। কিন্তু
এবার যেহেতু রোজা চলছে, তাই দিনের বদলে রাতে খেলার আয়োজন সম্ভব কি না, সে বিষয়টিই এখন
বিবেচনা করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা এবং জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখানোর
বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে বলে আয়োজক কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এতে খরচের জন্য হয়ত স্পন্সর
প্রয়োজন হবে। সে বিষয়ে মেয়র সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।”
যদি রাতের বেলায় এবারের বলী খেলা হয়, তাহলে তা হবে শতবছরের ইতিহাসে ফ্লাড
লাইটের আলোয় জব্বারের বলী খেলার প্রথম আয়োজন।
এবারও হচ্ছে না জব্বারের বলী খেলা
জব্বারের বলী খেলা এবারও হচ্ছে না
করোনাভাইরাস: শতবছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো স্থগিত জব্বারের বলী খেলা