সোমবার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ
ও উৎপাদন) এবিএম ওয়াহিদুর রহমান বলেন, জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে ১৩ লাখ
২৭ হাজার ২৭ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে।
কৃষক বেশকিছু আলু বিক্রি করতে পারলেও অধিকাংশই এখনও সংরক্ষণ করা যায়নি
বলে জানান তিনি।
এ জেলায় সচল ৬৮টি হিমাগারে ধারণ ক্ষমতা ৫ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টন। সংরক্ষণকারীরা
সেই আলু এখনও হিমাগারে পাঠাতে বা বাজারজাত করতে পারেনি বলছেন তিনি।
এ কৃষি কর্মকর্তা জানান, এ হিমাগারগুলো এখনও অনেকটা ফাঁকা। অনেকে হিমাগারে
নেওয়ার জন্য আলু বস্তাবন্দি করে রাস্তার ধারে স্তূপ করে রেখেছে। আবার অনেকে আলু এখনও
বস্তাবন্দি করতে পারেনি।
“জমিতে স্তূপ করে রেখে খড়, শুকনো কচুরী এবং পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়েছে।”
বর্তমানে প্রতি কেজি আলুর মাঠের দর ১৫ থেকে ১৬ টাকা। খুচরা বাজারে আলু
বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা দরে। করোনাভাইরাসের ত্রাণের সাথে আলুযুক্ত করায় কিছুটা উপকার
হলেও বিপুল পরিমাণ আলু নিয়ে কৃষক ও সংরক্ষণকারীদের যেন দিশেহারা অবস্থা!
চাষিরা জানান, মুন্সীগঞ্জের মুন্সীরহাটে নতুন চালু হওয়া সুলতান কোল্ডস্টোরেজে
ধারণ ক্ষমতা সাড়ে চার লাখ বস্তা। তাতে এক লাখ ২৫ হাজার বস্তা সংরক্ষণ করা গেছে মাত্র।
আরও দুই লাখ ২৫ হাজার বস্তার ধারণ ক্ষমতাই ফাঁকা রয়ে গেছে। মুক্তারপুরের আলী হিমাগারে
৬০ শতাংশ আলু সংরক্ষণ হয়েছে। আর দেওয়ান কোল্ডস্টোরেজে ভর্তি হয়েছে ৮০ শতাংশ। নিশান
কোল্ডস্টোরেজে ৬৫ শতাংশ আলু ভর্তি হয়েছে। আবার টঙ্গীবাড়ি হিমাগারে মরিচের অংশ বাদে
এক লাখ টন আলু রাখা গেছে।
শ্রীনগর, টঙ্গীবাড়ি, লৌহজং, সিরাজদিখান, মুন্সীগঞ্জ সদর ও গজারিয়া উপজেলায়
বিভিন্ন রাস্তার পাশে সারি সারি আলুর বস্তা রাখা হয়েছে বলে কৃষক আলম মোল্লা, কুদ্দুস
শেখসহ কয়েকজন কৃষক জানান।
বর্তমানে করোনাভাইরাস রোধে দেশব্যাপী বন্ধে আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। করোনাভাইরাস
প্রতিরোধে জনগণকে ঘরে থাকার সরকারি কর্মসূচি শুরু হওয়ায় মজুর ও পরিবহন সংকট তৈরি হয়েছে।
আলুচাষি আমির হোসেন বলেন, “আলুর ফলনও ভালোই হয়েছে। বাজার দরও ভালো। তবে
বীজ আলু সংরক্ষণে কোল্ডস্টোরেজে পাঠানো প্রয়োজন।
“আলুর বস্তাগুলো ক্ষেতে ও বিভিন্ন রাস্তায় পড়ে আছে। আলু পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয়
যানবাহন ও শ্রমিক পাচ্ছি না।”
তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও কয়েকদিন এভাবে থাকলেও সমস্যা হবে না বলে
জানান তারা।