ক্যাটাগরি

‘পুরোনো পাকিস্তান’: পিএমএল-এন এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন জেমিমা

পিএমএল-এন এর এক নেতা জেমিমার লন্ডনের বাসার সামনে বিক্ষোভের ডাক দেওয়াতেই ক্ষুদ্ধ হয়ে তিনি বলেছেন, এ যেন সেই পুরোনো পাকিস্তান, তিনি যেন সেই নব্বই দশকে ফিরে গেছেন।

‘দ্য ডন’ পত্রিকা জানায়, পাকিস্তানে ইমরান খানের পিটিআই সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর বৃহস্পতিবার পিএমএল-এন নেতা আবিদ শের আলি এক টুইটে লন্ডনে জেমিমার বাসার সামনে বিক্ষোভের ডাক দেন।

জেমিমার বাসার পূর্ণ ঠিকানার একটি ছবি দিয়ে ইমরানের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন তিনি। সেইসঙ্গে জেমিমার বাসার সামনে এই বিক্ষোভের জন্য ইমরান খানকেও দায়ী করেছেন শের আলি।

তিনি লিখেছেন, “ইমরান খান তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ এবং সেখানে হামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিদিন তিনি বিদ্বেষ, সন্ত্রাসবাদ উস্কে দিচ্ছেন।” জেমিমার বাসার সামনের বিক্ষোভ ‘শান্তিপূর্ণ ও অহিংস’ হবে বলেও জানিয়েছে পিএমএল-এন এর এই নেতা।

গত মাসে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এই পিএমএল-এন এর নেতৃত্বেই ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তুলেছিল বিরোধী দলগুলো। পরে সেই অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারান ইমরান খান।

এরপর ইমরান তার অনুসারীদেরকে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানান। তাকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসা পিএমএল-এন এর নেতাদের বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ করার নির্দেশ দেন তিনি। এর পাল্টা জবাবেই জেমিমার লন্ডনের বাড়ির সামনে পিএমএল-এন নেতা শের আলির ওই বিক্ষোভের ডাক।

এতে ক্ষুব্ধ জেমিমা শুক্রবার এক টুইটে বলেছেন, “আমার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ, আমার সন্তানদের টার্গেট করা, স্যোশাল মিডিয়ায় ইহুদিবিদ্বেষ…মনে হচ্ছে আমি যেন নব্বইয়ের দশকের লাহোরে ফিরে গেছি।” হ্যাসট্যাগ দিয়ে ‘#পুরোনো পাকিস্তান’ও লেখেন তিনি।

জেমিমা একথাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি নিজে এবং তার সন্তানরা পাকিস্তানের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন।

জেমিমা বলেন, “তফাতটা হচ্ছে, পাকিস্তানের রাজনীতি নিয়ে আমার করার কিছুই নেই। আমার সন্তানদেরও কিছু করার নেই। তারা নিজেরা নিজেদের নিয়েই আছে। এমনকী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তারা সক্রিয় নয়।”

ওদিকে, পাকিস্তানের সাংবাদিক হামিদ মীর পিটিআই ও পিএমএল-এন নেতাদেরকে এ ধরনের বিক্ষোভ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

এক টুইটে মীর লেখেন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-কে লন্ডনে বাড়ির (নওয়াজ শরিফ এমএনএস) সামনে বিক্ষোভ বন্ধ করতে হবে। আর পিএমএল-এন এরও জেমিমার বাড়ির সামনে একই কাজ করা উচিত হবে না।

১৯৯৫ সালে ইমরান খানকে বিয়ে করেছিলেন যুক্তরাজ্যের নাগরিক জেমিমা গোল্ডস্মিথ। ২০০৪ সালে ইমরান খানের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় জেমিমার। এই দম্পতির দুই সন্তান আছে।

বর্তমানে সন্তানদের নিয়ে জেমিমা লন্ডনে থাকেন। ইমরানের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের পরই তিনি পাকিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। জেমিমার দাদা ছিলেন জার্মান ইহুদি।

পাকিস্তানে জেমিমা কীভাবে ইহুদি বিদ্বেষের শিকার হয়েছিলেন তা আগেই জানিয়েছেন। পরে বেশ কয়েকবার সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানে থাকাকালে ইহুদিবিদ্বেষের শিকার হওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।

গত বছরও সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে সরব ছিলেন জেমিমা। তিনি বলেছিলেন, ২০০৪ সালে মিডিয়া আর রাজনীতিবিদদের ক্রমাগত হুমকি আর আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পেতেই তিনি পাকিস্তান ছেড়েছিলেন।