নেতৃত্বে নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই প্রশ্নের মুখোমুখি ছিলেন রুট। সমালোচনার
স্রোত তীব্র হয় গত অ্যাশেজে হারার পর। রুট তখনও নেতৃত্ব ছাড়েননি, তাকে সরিয়েও দেওয়া
হয়নি। বরং অনেক পরিবর্তন এনে রুটের নেতৃত্বেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায় ইংল্যান্ড দল।
সেখানেও আসে ব্যর্থতা। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের তলানির দিকের দলের কাছে হারতে হয় সিরিজ।
সেই সফর শেষেও নেতৃত্ব চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছের কথাই বলেছিলেন রুট। তবে দেশে
ফিরে পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পর শুক্রবার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন তিনি।
ইংল্যান্ডকে ৫০ টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম অধিনায়ক আথারটনের মতে, অ্যাশেজ
শেষেই ছেড়ে দেওয়া উচিত ছিল রুটের। সাবেক এই ওপেনার স্কাই স্পোর্টসকে বললেন, পরবর্তী
অধিনায়ক হিসেবে স্টোকস ছাড়া আর কাউকে দেখেন না তিনি।
“ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আগেই, অ্যাশেজ শেষেই মোটামুটি স্পষ্ট ছিল যে পরিবর্তনটা
প্রয়োজন। প্রতিটি ইংল্যান্ড অধিনায়কের জীবনেই এই মুহূর্তটি আসে, যখন উপলব্ধি হয় যে,
সবটুকু দেওয়া হয়ে গেছে, কিছু আর বাকি নেই দেওয়ার।”
“নতুন অধিনায়ক হিসেবে বেন স্টোকসই অবধারিত পছন্দ। সে জো রুটের খুব ঘনিষ্ঠ।
রুট নিজে থেকেই ছেড়ে দেওয়ায় তাই তার জন্য প্রস্তাব গ্রহণ করা সহজ হবে।”
নতুন অধিনায়কের লড়াইয়ে স্টোকস অনেকটা এগিয়ে আরেকটা কারণেও। ইংল্যান্ড টেস্ট
দলের এখন যে নড়বড়ে অবস্থা, দলে জায়গা পাকা নয় বেশির ভাগ ক্রিকেটারের। স্টোকস এই জায়গায়
এগিয়ে, বিবিসিকে বললেন ২০০৫ অ্যাশেজ জয়ী অধিনায়ক মাইকেল ভন।
“এই দায়িত্ব নেওয়ার মতো অন্য কাউকে (স্টোকস ছাড়া) আমার চোখে পড়ছে না, দলে
যার জায়গা নিয়ে নিশ্চয়তা আছে।”
“বেন স্টোকসের ক্রিকেট মস্তিষ্ক দারুণ, নিজের সবটুকু ঢেলে দেবে সে এবং নিশ্চিতভাবেই
চারপাশের সব ক্রিকেটারের শ্রদ্ধাও সে আদায় করে নিতে পারবে।”
মাঠের বাইরের শৃঙ্খলাজনিত সমস্যায় একসময় আলোচিত ছিলেন স্টোকস। সেই দিনগুলিকে
তিনি পেছনে ফেলে এসেছেন। তবে এখন তাকে অধিনায়ক করার ক্ষেত্রে মূল সংশয়ের জায়গা তার
মানসিক অবস্থা। গত জুলাইয়ে মানসিক অবদানের কারণে ক্রিকেট থেকে অনির্দিষ্টকালের বিরতি
নিয়েছিলেন এই অলরাউন্ডার। তার চোট সমস্যাও আছে। বিরতিতে থাকার সময়ই তার আঙুলে দ্বিতীয়
দফায় অস্ত্রোপচার করা হয়। গত মাস থেকে ভুগছেন হাঁটুর সমস্যায়।
ডেইলি মেইল-এ লেখা কলামে এই দিকগুলোই তুলে ধরলেন নাসের হুসেইন। পরবর্তী
অধিনায়ক বাছাইয়ে তার ভোটও স্টোকসই পাচ্ছেন। তবে সাবেক অধিনায়ক ও জনপ্রিয় এই ধারাভাষ্যকার
বললেন খোলামেলা আলোচনা করতে।
“এই দায়িত্ব পালনের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে খুব ভালো অবস্থায় থাকতে হবে।
বেন স্টোকসের মাঠের বাইরের নানা ঝামেলা ছিলই। নতুন ক্রিকেট পরিচালক (ইংল্যান্ডের ক্রিকেট
বোর্ডের) যে-ই হোক না কেন, তার প্রথম কাজ অবশ্যই হবে স্টোকসের সঙ্গে বসা, তার চোখে
চোখ রেখে কথা বলা এবং এটা জেনে নেওয়া যে সে কোন অবস্থায় আছে।”
ইংল্যান্ডের পরের সিরিজ জুনের শুরুতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের
টেস্ট সিরিজ। নতুন অধিনায়ক বাছাইয়ে তাই কিছুটা সময় এখনও আছে তাদের।