শাহরিয়ার আলম। ফাইল ছবি
তিনি বলেছেন,
প্রতিবেদনের বিভিন্ন বিষয়ে ওয়াশিংটনের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে বাংলাদেশ সরকার।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে ২০২১ সালে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও নির্যাতনের’ মতো অভিযোগ থাকলেও তারা ‘দায়মুক্তি’ পেয়ে আসছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ভাষ্য।
রোববার
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে
শাহরিয়ার বলেন, “আমরা যেটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটার প্রতিটি বিষয় নিয়ে আমরা মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কথা বলব। আমার তাদের কাছ থেকে ব্যাখ্যা জানতে চাইব। আমরা জানতে
চাইব, যেখানে কাজ করার সুযোগ আছে।
“আমরা তাদেরকে বলব, যেসব উপাদান বাংলাদেশের মানুষের সাথে সরাসরি
পরিপন্থী, সেগুলো তুলে নিতে। কারণ এতে তাদের গ্রহণযোগ্যতা, তাদের অ্যাংগেজমেন্টের গ্রহণযোগ্যতা
অন্যান্য ক্ষেত্রেও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে।”
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে, সেই নির্বাচন নিয়েও সমালোচনা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনের
কিছু তথ্য বাংলাদেশের বাস্তবতা থেকে ‘যোজন যোজন দূর’
দাবি করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যেগুলো আমরা আউটরাইট রিজেক্ট করছি, এগুলো বাংলাদেশ
কখনোই এন্টারটেইন করতে পারবে না। বিশেষ করে সমকামীদের অধিকারের বিষয়ে যা বলা হয়েছে।”
আইন ও সালিশ কেন্দ্রকে উদৃধত করে ৬০৬টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের
কথা বলা হলেও এ্ সংখ্যা তাদের প্রতিবেদনের সাথে মেলে না বলে দাবি করেন তিনি।
শাহরিয়ার বলেন, “এই রিপোর্টে যে কোয়ালিটি অব রিসার্চ বা ডেটা ব্যবহার
করা হয়েছে। এটার মধ্যে একটা বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে।
“আরও দুয়েকটা দেশও রিঅ্যাকশন দিয়েছে, সেখানেও কিছু ফান্ডামেন্টাল
ভুল বা ফ্লজ আছে। এই রিপোর্টের কোয়ালিটিটাকে অ্যাপ্রেশিয়েট করা যাচ্ছে না। এ কারণে,
আনফরচুনেটলি।”
ভবিষ্যতে এই ধরনের প্রতিবেদন দেওয়ার সময় সরকারের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে
নিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে আহ্বান জানান শাহরিয়ার।
তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের যে সম্পৃক্ততা, আমরা আশা
করতে পারি, তারা আমাদেরকে ড্রাফটটা প্রথমে দেখাবে, এটা একটা নর্মের মধ্যে পড়ে… এটলিস্ট
ডেটাগুলি কারেক্ট কি না, অথবা আমাদের ডেটায় কিছু আছে কি-না।
“ফুটনোটেও তারা বলে দিতে পারে, অমুক কেন্দ্র এটা বলেছে, সরকারের
এই ফিগার। যে কেন্দ্রের রেফারেন্স দেওয়া হয়েছে, সেখানেও তো তারা ভুল করেছে। আমি জানি
না, তাদের সেই ধৈর্য আছে কি-না, অবজেকটিভ ইজ ডিফরেন্ট। আমরা আশা করব, তারা রিপোর্ট
প্রকাশের আগের আমাদের সাথে পরামর্শ করবেন।”
যুক্তরাষ্ট্রের
সঙ্গে ব্যাখ্যা চাওয়ার অংশ হিসাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়
ও বিভাগ থেকে তথ্য নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এই তথ্যগুলি যে মন্ত্রণালয়ের
কাছে থাকার কথা, আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছি, তাদের নাম্বার্স পাওয়ার জন্য। তাদের থেকে
তথ্য পেলে আমরা সেই মিটিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিব।”
দুই দেশের সরকারের সম্পৃক্ততার মধ্যেও একের এক নেতিবাচক ফল আসার
বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “এখানে তো হতাশা কিছু আছেই। লুকানোর কিছু নেই। কেন ভুল
তথ্য, এখানে বেশ কিছু তথ্য ভুল, আপনারাও বিশ্লেষণ করে দেখতে পাবেন।
“অনেক কিছু দাবি জানানো হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের ধর্মীয় চর্চা,
সামাজিক চর্চা বা ইতিহাসের সাথে যায় না। এক্ষেত্রে কেউ হয়ত কোনো জায়গায় ঠিকমত কাজটা
করছে না। আমরা বুঝতে চাই, কেন এটা হচ্ছে।”