চীনের তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে ছয় মাস
কাটিয়ে ১৬ এপ্রিল পৃথিবীতে ফিরেছেন দেশটির তিন নভোচারী। তিয়ানগংয়ে এটি ছিল চীনের দ্বিতীয়
এবং দীর্ঘতর মিশন। চীনা স্পেস স্টেশনটির নির্মাণকাজ এখনো চলছে।
শেনঝোউ ১৩ মহাকাশযানটি ১৬ এপ্রিল, শনিবার
স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫৬ মিনিটে মঙ্গোলিয়ার মরুভূমিতে অবতরণ করে বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক
সাইট ভার্জ। মহাকাশযানটি স্পেস স্টেশনের ‘তিয়ানহে’ মডিউল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পৃথিবীর
উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল নয় ঘণ্টা আগে।
গেল বছরের অক্টোবর মাসে গোবি মরুভূমির
জিউকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে তিয়ানগং স্পেস স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন
তিন মহাকাশচারী। সব মিলিয়ে ১৮৩ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন তারা।
মহাকাশে যাওয়ার আগে শেনঝোউ ১৩-এর তিন নভোচারী। ছবি: সিনহুয়া
তবে, দীর্ঘ এই মিশনে সবচেয়ে গুরুত্ব
পাচ্ছে নভোচারী ওয়াং ইয়াপিংয়ের অর্জন। চীনের প্রথম নারী নভোচারী হিসেবে ‘স্পেসওয়াক’-এর
অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। এ ছাড়াও তিয়ানহে স্পেস স্টেশনে যাওয়া প্রথম নারী নভোচারীও তিনি।
ওয়াংয়ের সঙ্গে ছিলেন নভোচারী ই গুয়াংফু এবং কমান্ডার ঝাই ঝিগাং।
ভার্জ জানিয়েছে, তিন নভোচারী মিলে অন্তত
দু’বার স্পেসওয়াকে গিয়েছেন। মহাকাশ স্টেশনের বিভিন্ন অংশে একাধিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা
চালানোর পাশাপাশি পৃথিবীর শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি লাইভ লেকচারও দিয়েছেন তারা।
তিয়ানগং স্পেস স্টেশনের কাজ শেষ করার
জন্য ১১টি মিশনের পরিকল্পনা করেছে চীন। সেই পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে কাজ করছে শেনঝোউ
১৩। চীন তিয়ানহে মডিউল মহাকাশে পাঠিয়েছে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে। পরে মডিউলটিকে চালু
করতে আরও তিন মহাকাশচারীকে পাঠায় দেশটি। জুন মাসে শেনঝোউ ১৪ মহাকাশে পাঠাবে চীন। এ
বছরের মধ্যেই তিয়ানগংয়ের নির্মাণকাজ শেষ করার পরিকল্পনা করেছে দেশটি, মহাকাশ স্পেশনটিতে
যুক্ত হবে আরও দুটি স্পেস মডিউল।
মহাকাশে ছয় মাস কাটানো অনেক দীর্ঘ সময়
মনে হলেও ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)’-কে বিবেচনায় নিলে, এটি আহামরি কিছু
নয়। আইএসএস-এ সাধারণত এমন দীর্ঘ সময়ই কাটান নভোচারীরা। তবে আইএসএস প্রকল্পের অংশ নয়
চীন।
মহাকাশে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কাটানোর রেকর্ডটির
দাবিদার এখন নাসার মহাকাশচারী মার্ক ভ্যান দে হেই। মহাকাশে একটানা ৩৫৫ দিন কাটিয়েছেন
তিনি।