জেলা শহরের সমবায় মার্কেটে ‘জুলুম বস্তির’ ব্যানারে এই দোকানটি গত বুধবার
অস্থায়ীভাবে চালু করেন তারা।
সারাবিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে
দেশের প্রায় সবকিছু বন্ধ করে সরকার সবাইকে ঘরে থাকতে বলেছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছে নিম্ন
আয়ের মানুষ।
‘জুলুম বস্তির’ অ্যাডমিন মিঠুন হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,
এই পরিস্থিতিতে তারা তাদের সাধ্যমত নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করছেন।
তাদের দোকানে রয়েছে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, আদা, রসুন,
লবণ, ডিম ও সাবান।
মিঠুন বলেন, অসহায় ও দুস্থরা এই দোকান থেকে বাজার দর থেকে ৩০ শতাংশ কম
দামে এসব খাদ্যসামগ্রী কিনতে পারবেন। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই কেজি চাল, ৫০০ গ্রাম
ডাল, ৫০০ গ্রাম তেল, এক কেজি আলু, ৫০০ গ্রাম পেঁয়াজ, ৫০০ গ্রাম কাঁচামরিচ, ২৫০ গ্রাম
আদা, ২৫০ গ্রাম রসুন, ৫০০ গ্রাম লবণ, চারটা ডিম, ডেটল সাবান একটি ও একটি পচা সাবান
কিনতে পারবেন।
দৈনিক বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই দোকান খোলা রাখা হয়। সবাই
নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করেন। দূরত্ব বজায় রাখার জন্য দোকানের সামনে বৃত্ত
এঁকে দেওয়া হয়েছে।
গ্রুপটি এর আগে রক্তদান কর্মসূচি, শীত-বন্যার মত বিভিন্ন দুর্যোগে অসহায়
মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
গ্রুপের তহবিল সংগ্রহ হয় কিভাবে সে বিষয়ে মিঠুন হাসান বলেন, এসব কাজে তাদের
গ্রুপের শতাধিক সদস্য নিয়মিত সাড়া দেন। তারা সামর্থ্য অনুযায়ী অনুদান দেন। গ্রুপের
সদস্য মেহেদি হাসান, নাঈম হোসেন, আরাফাত হোসেন, রাকিব ইসলাম, মাহফুজ, নাজমুলসহ বেশ
কয়েকজন আলোচনা করে তারা এসব সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান মিঠুন।
এই দোকান থেকে খাদ্যসামগ্রী কেনার পর শহরের রিকশাচালক সফিকুল ইসলাম বলেন,
“কাজ নেই। হাতের জমানো টাকা শেষের পথে। অথচ নিত্যপণ্যের দাম সব জায়গায় বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে
কম দামে কিনতে পেরে আমার খুব উপকার হল।”
এমন উদ্যোগে অনেকেই উপকৃত হচ্ছেন বলে মনে করেন নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি;
যিনি দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বিভিন্ন রকম কাজকর্ম করেন।
গত বুধবার দোকানটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক
নূর কুতুবুল আলম। সে সময় ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলীসহ সমাজের গুরুত্বপূর্ণ
ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।