পিতামাতা হিসেবে সন্তানকে আদর্শ শিক্ষা
দিয়ে সুশৃঙ্খল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই হল সবচেয়ে বড় কর্তব্য। অনেক অভিভাবক শিশুকে সুশিক্ষা
দিতে গিয়ে কড়া শাসন করে বসেন। এতে ফলাফল হিতে বিপরীতও হতে পারে।
শিশুকে সুশিক্ষা দিতে প্রয়োজন ধৈর্য্য
এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি।
ভারতীয় মনোবিজ্ঞানী এবং ‘হ্যাপিনেস ইজ
লাভ’য়ের প্রতিষ্ঠাতা জ্যোতিকা বেদি বলেন, “যে মুহূর্তে কেউ শৃঙ্খলা শব্দটা শোনেন তখনি
কঠিন শাস্তি, কঠোরতা ও নির্দয়ভাবের ছবি ভেসে ওঠে। তাই শিশুকে শৃঙ্খলা শেখাতে অভিভাবককে
ইতিবাচক ও কোমল আচরণ করার অনুশীলন করতে হবে।”
শিশুকে কঠোর শাস্তি না দিয়ে বরং তার ভুল
ধরিয়ে দিয়ে সংশোধনের চেষ্টা করা বেশি কার্যকর বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ফেমিনা ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বেদি
আরও বলেন, “শিশুরা তাদের চারপাশের ব্যক্তিদের দেখে সবচেয়ে ভালো শেখে, বিশেষ করে
বাবা-মা যারা রোল মডেল হিসাবে কাজ করে। প্রাপ্তবয়স্কদের অবশ্যই সন্তানদের কাছে অনুকরণীয়
আচরণের মডেল হয়ে উঠতে হবে।”
তিনি শিশুদের শৃঙ্খলা শেখাতে সদয় আচরণ
করার পরামর্শ দেন।
শারীরিক শাস্তি থেকে বিরত থাকা
দৈহিক শাস্তি, যেমন- থাপ্পড়, ঝাঁকুনি
বা চড় ইত্যাদি শিশুদের মাঝে ভয় জাগিয়ে তুলতে পারে। বিশ্বাসের সমস্যা তৈরি করতে পারে
এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মতো হিংসাত্মক এবং আক্রমণাত্মক আচরণ করতে শিশুদের উৎসাহিত করতে
পারে।
শিশুর জন্য শারীরিক শাস্তির বিকল্প চিন্তা
করতে হবে। এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যেন তার অভ্যন্তরীণ রূপান্তর, উপলব্ধি এবং সংশোধনের
প্রেরণা সৃষ্টি হয়।
কিশোরদের সঙ্গে এমন আচরণ নানান ঝুঁকিকর
ও অসামাজিক কার্যকলাপের সূত্রপাত ঘটাতে পারে।
ইতিবাচক অনুপ্রেরণা
শিশু কোনো কাজ সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করে
থাকলে তাকে সাধুবাদ জানানো উচিত। শিশুর কাজের প্রশংসা করা তার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে
এবং অন্যান্য কাজে অনুপ্রেরণা দেয়।
নিজের প্রতি যত্নশীল হওয়া
বড়রাও অনেকসময় ভুল করেন। কোনো ভুল করলে
তার জন্য হতাগ্রস্ত না হয়ে বরং নিজের ওপর সহানুভূতিশীল আচরণ করতে হবে এবং ক্ষমা করে
দেওয়ার মনোভাব রাখতে হবে।
এর ফলে শিশুরাও ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষমা করার
মতো মানবিক দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন
সন্তানের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ের আলাপ