ক্যাটাগরি

টিভি বিতর্কে বিবাদে জড়ালেন ফ্রান্সের দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী

জনমত জরিপে কট্টর ডানপন্থি প্রার্থী মারিন ল্য পেন মধ্যপন্থি প্রার্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও ব্যবধান অল্প হওয়ার কারণে অনিশ্চয়তা আছে।

তাছাড়া, লাখ লাখ ভোটার এখনও কাকে ভোট দেবে সে ব্যাপারে মনস্থির করতে পারেনি। রোববার ভোটাররা কি রায় দেয় তার ওপর নির্বাচনের ফল অনেকটাই নির্ভর করছে৷

তার আগে বুধবার টিভিতে দুই ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের ওই বিতর্ক চলাকালে চট করেই দুই প্রার্থীর ঝগড়া বেধে যায়। জীবনযাত্রা ব্যয়, রাশিয়া, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অভিবাসন নিয়ে একে অপরের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তারা।

১ কোটি ৫৬ লাখ দর্শকশ্রোতা টিভিতে এই বিতর্ক দেখেছে। সেখানে ম্যাক্রোঁ তার প্রতিপক্ষ ল্য পেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার ক্ষমতার ওপর তার নির্ভরশীলতার অভিযোগ করেন। অন্যদিকে, ল্য পেন জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে কপটতার অভিযোগ করেন। 

তাদের বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, বেতন ও পেনশনের মতো বিষয়েও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর নীতির কড়া সমালোচনা করেন ল্য পেন৷ অভিবাসন ও আইনশৃঙ্খলার মতো ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতার অভিযোগ করেন তিনি৷

ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, কট্টর-ডান চ্যালেঞ্জের মুখে ম্যাক্রোঁ
 

ফ্রান্সের ঋণ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলার সময় লড়াকু মেজাজে ম্যাক্রোঁ তার প্রতিপক্ষ ল্য পেনকে বলেন, “সবকিছুকে একসঙ্গে গুলিয়ে ফেলা বন্ধ করুন।” সঙ্গে সঙ্গে পাল্টা জবাবে ল্য পেন বলেন, “আমাকে লেকচার দেবেন না।”

এর আগে ২০১৭ সালের টিভি বিতর্কে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকেই জয়ী হিসাবে দেখেছিলেন বেশিরভাগ মানুষ । ওই সময় তার প্রতিপক্ষ প্রার্থী কিছুটা অপ্রস্তুত ছিলেন বলে প্রতীয়মান হয়েছিল। তবে এবার মারিন ল্য পেন শুরু থেকেই ছিলেন অনেক বেশি প্রস্তুত এবং প্রত্যয়ী।

তবে পুরো বিতর্ক জুড়ে ম্যাক্রোঁ আক্রমণ শানিয়ে গেছেন। দৃশ্যত মনে হয়েছে, তিনি যেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট নন বরং প্রতিদ্বন্দ্বী। বারবার প্রতিপক্ষের কথায় বাধা সৃষ্টি করেছেন তিনি।

মেরিন ল্য পেন বলেন, ৭০ শতাংশ ফরাসি বিশ্বাস করে গত পাঁচ বছরে তাদের জীবনযাপনের মান নেমে গেছে। তিনি নির্বাচিত হলে নাগরিক শান্তি ও জাতীয় ভ্রাতৃত্বের প্রেসিডেন্ট হবেন। তিনি বলেন, “আমাদের ফরাসিদের নিজ দেশে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।”

অন্যদিকে ম্যাক্রোঁ বলেন, ফ্রান্স নজিরবিহীন সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস মহামারীর পর ইউরোপে যুদ্ধ চলছে। তিনি নেতৃত্বের আসনে থেকে এসব চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে ফ্রান্সকে পরিচালনা করেছেন এবং দেশকে শক্তিশালী করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছেন। তিনি বলেন, রোববারের ভোট হবে “ইউরোপ, ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে এক গণভোট এবং স্পষ্টভাবে বেছে নেওয়ার মুহূর্ত।”

বিবিসি জানায়, বুধবারের এই বিতর্কে ল্য পেনের বলিষ্ঠ বক্তব্যের পরও ৫৯ শতাংশ দর্শকশ্যোতা মাক্রোঁকেই জয়ী হিসেবে মনে করছেন৷

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম ধাপের ভোট হয়েছে গত ১০ এপ্রিলে। এই ভোটে এগিয়ে রয়েছেন মাক্রোঁ৷ তার পরের অবস্থানেই আছেন মারিন ল্য পেন। আগামী ২৪শে এপ্রিল দ্বিতীয় পর্বের ভোটে মুখোমুখি হবেন এই দুই প্রার্থী।