দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে এবারের আইপিএলে খেলছেন মুস্তাফিজ। ২৯ মে পর্যন্ত চলবে এই টুর্নামেন্ট। সত্যি সত্যিই বাংলাদেশ টেস্ট দলে ডাক পেলে টুর্নামেন্টের মাঝপথ থেকেই ফিরতে হবে তাকে।
তাকে টেস্টে ফেরানোর আলোচনার সূত্রপাত মূলত অন্য কয়েকজন পেসারের চোট সমস্যার কারণে। সবশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের মাঝপথে চোটের জন্য ছিটকে যান দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম।
কাঁধের সেই চোট এখনও ভোগাচ্ছে তাসকিনকে। তিনি কবে মাঠে ফিরবেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তাকে পাঠানো হতে পারে লন্ডন। কয়েক দিনের মধ্যেই সিঙ্গাপুরে একটি অস্ত্রোপচার করানো হবে শরিফুলের। এরপর বোঝা যাবে, তার মাঠে ফিরতে কত দিন লাগবে।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলার সময় হাতে চোট পান ইবাদত হোসেন চৌধুরি। বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে তার ডান হাতে।
এমন পরিস্থিতিতে টেস্ট দলের জন্য পেসার নিয়ে সঙ্কটে পড়তে পারে বাংলাদেশ। সেই সঙ্কটের সমাধান যদি মুস্তাফিজকে দিয়ে হয়, তাহলে তাকে ফেরত আনা হবে আইপিএল থেকে। শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিসিবির ইফতার অনুষ্ঠানে নাজমুল হাসান তা জানিয়ে দিলেন পরিষ্কার করেই।
“আমরা খেলোয়াড়দের একটা ফরম পাঠিয়ে জানতে চেয়েছিলাম, কে কোন সংস্করণে খেলতে চায়। যারা যে সংস্করণ খেলতে চায়, তাদের সেভাবেই রাখা হয়েছে। মুস্তাফিজ কিন্তু টেস্টের জন্য নাম লেখায়নি। সে কিন্তু বলে নাই, টেস্ট খেলতে চায়।”
“ও বলল কী বলল না, সেটা বড় ব্যাপার নয়। আমাদের যখন দরকার, তখন অবশ্যই ও খেলবে। কাজেই এখন যদি আমার শ্রীলঙ্কা সিরিজেও মুস্তাফিজকে দরকার হয়, অবশ্যই খেলবে। (যদি প্রয়োজন হয় ডাকা হবে কি না) অবশ্যই, অবশ্যই, অবশ্যই।”
প্রায় ৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মুস্তাফিজ খেলেছেন স্রেফ ১৪ টেস্ট। বৃষ্টিবিঘ্নিত অভিষেক টেস্টে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছিলেন তিনি। পরের কয়েক টেস্টেও বেশ ভালো বোলিং করেছিলেন। পরে চোটপ্রবণতার কারণে আস্তে আস্তে এই সংস্করণে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। এখন তো সাদা পোশাক থেকে পুরোপুরিই দূরে রেখেছেন নিজেকে।
সবশেষ টেস্ট খেলেছেন তিনি গত বছরর ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এর আগেরটি ২০১৯ সালের নিউ জিল্যান্ড সফরে। গত সাড়ে তিন বছরে টেস্ট খেলেছেন স্রেফ এই দুটিই।
নির্বাচকরা এরই মধ্যে সম্ভাব্য দল পাঠিয়েছেন বিসিবি প্রধানের কাছে। বোর্ড সভাপতি জানালেন, আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দল ঘোষণা করবেন তারা। সেখানে কি থাকবে মুস্তাফিজের নাম?
“তাসকিন, শরিফুল, ইবাদত টেস্টের জন্য আছে। এরা যদি থাকে, সেখানে মুস্তাফিজকেও যদি রাখি, দিন শেষে টিম ম্যানেজমেন্ট ওকে খেলাবে কিনা, আমরা জানি না। কিন্তু যখন দরকার হবে, অবশ্যই খেলবে। এটা কোনো ইস্যু নয়।”
আগামী ৮ মে চট্টগ্রামে শুরু হবে বাংলাদেশের অনুশীলন। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ১৫ মে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। মিরপুরে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে ২৩ মে।
সবশেষ টেস্ট সিরিজে স্পিন সামলাতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নিদারুণ ব্যর্থতায় হতাশ বিসিবি প্রধান খুঁজছেন কারণ। ক্রিকেটারদের কাছ থেকেই জেনে নিতে চান, কেন কেশভ মহারাজের স্পিনে ৫৩ ও ৮০ রানে অলআউট হলো দল।
“আমি তো বিশেষজ্ঞ নই, তবে এতদিন আমার ধারণা ছিল, আমরা স্পিন ভালো খেলি এবং পেসে আমাদের দুর্বলতা আছে। এইবারই আমার প্রথম মনে হয়েছে, পেসের বিপক্ষে আমাদের যে দুর্বলতা ছিল, সেটা তেমন ভাবে আর চোখে পড়ছে না। এখন মনে হচ্ছে, স্পিনের দিকে একটু নজর দিতে হবে।”
“ওরা ওয়ানডে সিরিজে মহারাজকে খুব ভালোভাবে সামাল দিয়েছিল, টেস্টে এসে কী হলো, সেটা বোঝার জন্য আজ সাড়ে চারটায় আমরা একটা মিটিং ডেকেছিলাম। আমার ইচ্ছা ছিল, টেস্ট দলের সঙ্গে বসব আলাদা করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ যানজটের জন্য ওরা ছয়টার সময়ও সবাই এসে পৌঁছাতে পারনি। আশা করছি, দুয়েক দিনের মধ্যেই আমরা ওদের সঙ্গে বসব। যে যত কথাই বলুক না কেন, আমাদের যে খেলোয়াড় খেলেছে এবং যেসব খেলোয়াড় সেখানে ছিল, এরা কেউ এরকম পারফরম্যান্স করার কথা না।”