ক্যাটাগরি

করোনাভাইরাস: জাপানে এক মাসের জরুরি অবস্থা

দেশটির রাজধানীসহ এসব প্রদেশ আগামী ৬ মে পর্যন্ত জরুরি অবস্থার আওতায় থাকবে বলে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এক ঘোষণায় জানিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় সোমবার থেকে জরুরি অবস্থা জারির প্রস্তুতি নিচ্ছিল জাপান।

টোকিওতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে নবগঠিত করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের এক বৈঠকে শিনজো আবে বলেন, “সমগ্র দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপ আমাদের জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করেছে। অনেক প্রাণহানিও ঘটাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে আমি সংবিধানের সংশোধিত অধ্যাদেশ ৫২/১ ধারা অনুযায়ী সাতটি প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করছি।”

টোকিও, ওসাকা, চিবা, কানগাওয়া, হিয়োগো, সায়তামা ও ফুকোওয়াকা, এ সাতটি প্রদেশ জরুরি অবস্থার আওতায় থাকবে।

আবে বলেন, “ জরুরি অবস্থা জারির পর স্থানীয় প্রাদেশিক প্রশাসন তা বাস্তবায়নের অধিকার পাবে, তারা জনগণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ পাবে।

“এই সময়ের মধ্যে লোকজনকে ঘরে অবস্থান করতে অনুরোধ করবো আমরা। ট্রেন বন্ধ কিংবা এর সিডিউল কমানোর সিদ্ধান্ত সরকারের হাতে নেই। এ সিদ্ধান্ত নেবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।”

আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণার কোন ক্ষমতা ছিল না। গত মাসে সংসদের এক সংশোধিত বিলে জরুরি অবস্থা জারির আইন পাশ হয়।

রোগটি জীবনের জন্য ‘গুরুতর হুমকি’ হয়ে উঠলে এবং এর দ্রুত বিস্তার অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করলে প্রধানমন্ত্রী জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন বলে এ আইনে বলা হয়েছে।

এ আইনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় মন্ত্রী ও বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সাথে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী আবে।

জরুরি অবস্থা জারি হলেও লকডাউনের কোন পরিকল্পনা জাপান সরকারের নেই। দেশটির সংবিধানে জনগণের স্বাধীনতাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জরুরি অবস্থা চলার মধ্যেও কেউ বাইরে গেলে কোন জরিমানা করার বিধান নতুন এ আইনে নেই।

জাপানে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪ হাজার ১০০ জন নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন আর মারা গেছে ৯৩ জন।

চীনের পরই জাপানে গত জানুয়ারি থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর হয়। এরপর থেকে সংক্রমণ কিছুটা ধীর গতিতে বিস্তার লাভ করছিল।

গত ২৪ মার্চ টোকিও অলিম্পিক গেইম স্থগিত হওয়ার আগে এই দেশে মোট আক্রান্তর সংখ্যা এক হাজারের নীচে ছিল। কিন্তু গত ১২ দিনে ব্যাপক হারে আক্রান্তের হার বাড়ায় জনমনে শঙ্কা তৈরি হয়। এর প্রেক্ষিত্রে সরকারের এই সিদ্ধান্ত এলো।

জাপানে সংক্রমণের গতি ক্রমাগত বাড়তে থাকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য সরকারের ওপর চাপও বাড়ছিল। বিশেষ করে টোকিওতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বেড়ে এক হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার পর তা আরও জোরদার হয়।

তবু যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের দেশগুলো ও চীনের তুলনায় জাপানে সংক্রমণ বিস্তারের গতি এখনও ধীর বলে জানিয়েছে রয়টার্স।