পিটার হাস
রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
পিটার হাস বলেন, “আমি স্পষ্ট করতে চাই যে, আসন্ন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষ বেছে নেবে না। আমরা শুধু এমন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রত্যাশা করি, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, কে দেশ চালাবে।”
বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকলেও রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে আলোচনা রয়েছে। তার মধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূতে এমন বক্তব্য এল।
বাংলাদেশের গত দুটি নির্বাচনে অনিয়মের নানা অভিযোগ ওঠার পর তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রও প্রশ্ন তুলেছিল।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনে যাবে না বলে ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তা চলতি মাসের শুরুতে ওয়াশিংটনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের বৈঠকেও আলোচনায় আসে।
তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ‘আহ্বান’ জানিয়েছেন, বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
এরপর বিএনপি বলে, জনগণের ভোটের অধিকার না দিতে বিদেশিদের কাছে ‘ধরনা’ দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, বিএনপিকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে কোনো প্রস্তাব ব্লিংকেনকে দেননি তিনি, বরং কথাচ্ছলে বলেছিলেন, ’পারলে বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসেন’।
রোববার ইস্কাটনের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিআইআইএসএস) ‘বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক: বর্ধিত সহযোগিতা ও অগ্রসর অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক এক সেমিনারেও নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা আসে।
সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের আগে বক্তব্য দিতে এসে পিটার হাস আরও বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাবে মর্মে বিবৃতি দেওয়ায় আমি সন্তোষ প্রকাশ করছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধে এ আইন সংস্কারে আইনমন্ত্রীর সাম্প্রতিক প্রতিশ্রুতিকেও আমি স্বাগত জানাই।”
তিনি বলেন, “কার্যত, ইতোমধ্যেই নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান শুধু নির্বাচনের দিন ভোটদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।
“সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জন্য আবশ্যক হলো নাগরিকদের মতামত প্রকাশ, সাংবাদিকদের ভীতিহীন অনুসন্ধান এবং সুশীল সমাজের ব্যাপক পরিসরে জনমত গঠনের সুযোগ নিশ্চিত করা।”
রাষ্ট্রদূতের পর প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানাচ্ছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, “গত ৫০ বছরে আমরা অনেক জটিলতার মধ্য দিয়ে গেছি, তবে গত কয়েক বছরে আমরা বেশ ভালো কাজ করেছি। অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রক্রিয়া নেওয়া হয়েছে।
”আমি বিদেশি নাগরিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি, তারা চাইলে আসতে পারে, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারে।”
গত জাতীয় নির্বাচনে সিলেটে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসনে এর আগে রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের পর্যবেক্ষণে যাওয়ার কথা তুলে ধরে মোমেন বলেন, “তারা কোনো অসঙ্গতি পায়নি। পর্যবেক্ষকদের নিয়ে আসায় এবং পর্যবেক্ষণে আপনাদের স্বাগত।
“আমরা নির্বাচন ব্যবস্থা উন্নত করতে চাই। আপনারা যদি কোনো দুর্বলতা ও ঘাটতি দেখেন, তাহলে আপনাদের পরামর্শকে আমরা স্বাগত জানাব।”