সোমবারও আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারের দরে ১৫ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়েছে
বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স
এবং রপ্তানি আয় কমে যাওয়ায় বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়ে গেছে। অনেক ব্যাংকের হাতে থাকা
ডলার দিয়ে এলসির দায় পরিশোধ করা যাচ্ছে না।
“চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই এখন আমরা ডলার বিক্রি করছি।”
সরকার ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ায় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স বেড়েছিল।
তাতে বাজারে ডলারের সরবরাহও বেড়েছিল।
এছাড়া করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি কমে
গেছে। ফলে ব্যাংকগুলোর ডলারের প্রয়োজনও কমে এসেছিল।
এ পরিস্থিতিতে বাজার ‘স্থিতিশীল’ রাখতে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ডলার
কেনা শুরু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে প্রায় তিন বছর পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে
ডলার কেনেনি।
ছাইদুর রহমান বলেন, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের সোমবার পর্যন্ত (২০১৯ সালের
১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল) মোট ৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। আর কেনা হয়েছে
৩০ কোটি ৫০ লাখ ডলারের মত। যে ডলার কেনা হয়েছে তার পুরোটাই মার্চ মাসে।
মঙ্গলবার আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৯৫ পয়সায় হাতবদল
হয়েছে। তিন মাস ধরে একই জায়গায় ‘স্থির’ রয়েছে ডলারের দর।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের আট মাসে
(জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রপ্তানি আয় কমেছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
আমদানি ব্যয়ের সাত মাসের তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে দেখা
যায়, জুলাই-জানুয়ারি সময়ে আমদানি খাতে ব্যয় কমেছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
আর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের তথ্য পাওয়া গেছে নয় মাসের, অর্থাৎ মার্চ
পর্যন্ত। এই নয় মাসে রেমিটেন্সে ১৬ দশমিক ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও এ বছর মার্চ মাসে
২০১৯ সালের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ রেমিটেন্স কম এসেছে। আগের মাস ফেব্রুয়ারির
চেয়ে মার্চে কমেছে ১২ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে আশার আলো জাগিয়ে রেখেছিল কেবল রেমিটেন্স,
করোনাভাইরাস মহামারী তাতেও ছায়া ফেলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ঘেটে দেখা যায়, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি
বাজার থেকে ডলার কেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর প্রতি বছরই বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ডলার
বিক্রি করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২০১৭ সালে ১২৩ কোটি ১০ লাখ ডলার, ২০১৮ সালে ২৩৭ কোটি ডলার এবং
২০১৯ সালে ১৬২ কোটি ১০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয় বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে।