সোমবার রাশিয়ার শীর্ষ কৌসুঁলিদের সঙ্গে এক বৈঠকে পুতিন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশটির ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) সোমবার ‘একটি সন্ত্রাসী দলের’ রাশিয়ার একজন বিখ্যাত টেলিভিশন সাংবাদিককে হত্যার চেষ্টা নস্যাৎ করে দিয়েছে।
‘‘আমাদের সাংবাদিকদেরকে হত্যার প্রস্তুতি নিতে তারা সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে,”বলেন পুতিন। তিনি তার বক্তব্যে কোনও সাংবাদিকের নাম বলেননি। তবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ওই সাংবাদিকের নাম ভ্লাদিমির সোলোভিয়েভ বলে জানায়।
রাশিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী টেলিভিশন ও রেডিও সাংবাদিকদের একজন সোলোভিয়েভ। নিজের টক শো গুলোতে তিনি প্রচুর কথা বলেন। তার অনুষ্ঠানে আসা অতিথিরা সাধারণত ইউক্রেইনকে অসম্মান করে এবং মস্কোর আগ্রাসনের পক্ষে কথা বলেন।
পুতিন তার বক্তব্যের পক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও প্রমাণ উপস্থাপন করেননি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সও তার বক্তব্য যাচাই করতে পারেনি। রয়টার্স থেকে সোলোভিয়েভের সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।
পুতিন বলেন, পশ্চিমারা বুঝতে পেরেছে ইউক্রেইন যুদ্ধে রাশিয়াকে হারাতে পারবে না। তারা তাই ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছে, সেটা হলো রাশিয়াকে ধ্বংস করে দেওয়া।
তিনি বলেন, ‘‘তাদের আরো একটি কর্মকাণ্ড আমাদের সামনে এসেছে: রাশিয়ার সমাজকে বিভক্ত করে দেওয়া এবং রাশিয়াকে ভেতর থেকে শেষ করে দেয়া। এটা কাজ করছে না।”
রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে উসকানি দিতে পশ্চিমা গুপ্তচররা বিদেশি সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেন পুতিন।
ভুয়া খবর এবং সংবাদ যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তার বিরুদ্ধে কৌসুঁলিদের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মত প্রকাশ করেন পুতিন। তবে এক্ষেত্রেও তিনি তার বক্তব্যের পক্ষে সুনির্দিষ্ট করে কোনও উদাহরণ দেননি।
পক্ষপাতিত্ব:
রাশিয়া পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে পক্ষপাতিত্বমূলক খবর পরিবেশন করার অভিযোগও করেছে।
রাশিয়ার অভিযোগ, পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো ইউক্রেইন যুদ্ধ নিয়ে মারাত্মক পক্ষপাতিত্বমূলক খবর দিচ্ছে। ওই অঞ্চলে নেটোর প্রভাব বৃদ্ধি নিয়ে মস্কোর যে উদ্বেগ এবং ইউক্রেইনে রুশ ভাষাভাষীর মানুষরা যে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন সেসব খবর উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।
ইউক্রেইন বরাবরই রুশ ভাষাভাষীদের নিপীড়নের শিকার হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তবে সোমবার নতুন করে পুতিনের অভিযোগ নিয়ে এখন পর্যন্ত তারা কোনো বক্তব্য দেয়নি।
ইউক্রেইনে আগ্রাসনের পক্ষে কারণ দেখাতে পুতিন আবারও বলেন, ‘‘ইউক্রেইনে বিশেষ সামরিক অভিযান প্রয়োজন ছিল। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে হুমকি দিতে ইউক্রেইনকে ব্যবহার করছে। তাছাড়া, রুশ ভাষীদের গণহত্যার জন্য ইউক্রেইন দায়ী।”