সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ক্যাফেটেরিয়ায়
এই ইফতারের আয়োজন করা হয়। সেখানে ট্রান্সজেন্ডারদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা
ইফতারে অংশ নেন।
বৃহন্নলার উদ্যোগে সোমবার দেশের ৭টি জেলায় একযোগে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন
করা হয়েছে বলে জানায় সংগঠনটি।
ঢাকাসহ দেশের ৮টি জেলায় অনুষ্ঠিত এই ইফতার মাহফিলে প্রায় ১৩৫ জন ট্রান্সজেন্ডার
অংশ নিয়েছে বলে জানান বৃহন্নলার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা
ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষার্থী সাদিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য
অধ্যাপক ড. এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “যাদেরকে
আমরা তৃতীয় লিঙ্গ বলি, তারা অনেকে স্বাবলম্বী পরিবারের জন্মগ্রহল করলেও আজকে তারা নিগৃহীত,
সমাজে নানাভাবে বঞ্চিত। রাষ্ট্রের টোটাল জনসংখ্যায় তারা কিন্তু কম নয়। তাদের উন্নয়ন
ও সম-অধিকারের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।
“যারা নেগেটিভ ভাবমূর্তি তৈরি করে তাদের আমরা বুঝাব।
তাদেরকে আমাদের ধারায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব। আমরা সবাই মানুষ, আমরা সবাই একত্রে বাস
করব। যদি না বুঝে কেউ আমাদের বঞ্চিত করে, আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে আমরা তার
প্রতিবাদ করব।”
বৃহন্নলার প্রধান উপদেষ্টা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা
ইন্সটিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, “আমরা
চাই একীভূত সমাজ। কোনো একটি অংশকে বাদ দিয়ে সমাজ একীভূত হতে পারে না। বৃহন্নলাদের নিয়ে
মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে আমরা কাজ করছি।”
অনুষ্ঠানে ট্রান্সজেন্ডার মানুষদের প্রতিনিধি ইভান আহমেদ কথা বলেন, “বেশিরভাগ
ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ আমাদের এড়িয়ে চলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
আমাদের মূল ধারায় ফেরাতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। এটা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা বিশ্বাস করি,
এর মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।”
২০১৭ সালের নভেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একঝাঁক তরুণ শিক্ষার্থীদের
হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় বৃহন্নলার। ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটির প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির
পরিবর্তন, জেন্ডার সংবেদনশীলতা ও সচেতনতা তৈরির জন্য স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছে
এ সংগঠন।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক আহসান হাবিব, প্রভাষক অসীম
দাস, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হায়াত
টুটুল, ট্রান্সজেন্ডার প্রতিনিধি সাগরিকা, মুনমুন, রুহি বক্তব্য দেন।