শিশুমঙ্গল
শিশুমঙ্গলের কথা
শোনো দিয়ে মন
শিশুমঙ্গল কথা
মানে সর্বজন।
শিশু থেকে পিতা আর
পিতা থেকে শিশু
শিশু থেকে মাতা আর
মাতা থেকে শিশু।
মাতৃগর্ভে যে মুহূর্তে
জীবন সঞ্চার
ত্রিভুবন জুড়ে শুরু
আনন্দ অপার।
সে মুহূর্ত থেকে যত্ন
শুরু জননীর,
মা ও শিশুর জন্যে
জনক অধীর।
মায়ের আহার মানে
শিশুর আহার
মায়ের সুস্বাস্থ্য মানে
শিশু-স্বাস্থ্য-সার।
দশমাস দশ দিন
যুগল জীবন
মা ও শিশুর যত্ন
করো সর্বজন।
অতঃপর আসে যদি
প্রসবের কাল
ধাত্রী ও চিকিৎসক
সযত্নে সামাল
দেবে সেই সঙ্কটের
পল অণুপল-
ধকলের শেষে হাসে
জীবন যুগল।
অতঃপর মাতৃক্রোড়ে
শিশু কাঁদে হাসে
আদরে জড়িয়ে গলা
মাকে ভালোবাসে।
মায়ের মুখের ভাষা
তোলে নিজ কানে।
ভরায় মায়ের কোল
হাসি আর গানে।
পান করে মাতৃস্তন্য,
খাঁটি পুষ্টিজল
মাতৃদুগ্ধ শ্রেষ্ঠ দুগ্ধ
অমল ধবল।
মেয়েশিশু ছেলেশিশু
দুজনে সমান
সাকুল্যে বছর তিন
করে দুগ্ধ পান।
ক্রমে ক্রমে মাছমাংস
সবজির মিশেল
তরলে কঠিনে মিলে
সুষম অঢেল
একটি শিশুকে করে
আদর্শ কিশোর,
পৃথিবীতে আনে ডেকে
রাঙা লাল ভোর।
শৈশবে কৈশোরে শিশু শোনে রূপকথা
যৌবনে সুশিক্ষা, শ্রম,
সমতা, সততা
তাকে করে সৃষ্টিশীল
মানুসের সেরা,
শিশুর অন্তরলোক
জ্ঞানগুহা হেরা।
পবিত্রতা অঙ্গে তার,
পবিত্র মনে
ধৌত করে সর্ব অঙ্গ
সর্ব প্রয়োজনে।
দুই হাত ও দুই পা,
মাথা, পিঠ, বুক
সর্বঅঙ্গে নিত্য স্নান
আনে স্বর্গসুখ।
আহারে বিহারে আগে,
শ্রমশেষে স্নান,
তার সঙ্গে ব্যবহার্য
সুগন্ধি সাবান
শিশুকে মানুষ করে,
মানুষকে ধ্যানী
ধ্যানেই জ্ঞানের শুরু
মানে জ্ঞানী।
ধ্যানী শিশু জ্ঞানী শিশু
জাতির মঙ্গল
জাতির মঙ্গল মানে
ধরিত্রী মঙ্গল
ধরিত্রী মঙ্গল মানে
জীবের মঙ্গল
জীবের মঙ্গল মানে
মনুষ্যমঙ্গল।
শিশুর মঙ্গল কথা
শোনে জ্ঞানবান
শিশুর মঙ্গল কথা
অমৃত সমান।
খোকার গল্প
সাতসকালে ডালে ডালে ডাকে নানান
পাখি
খোকন বলে, ‘আমিও পাখি, করবো ডাকাডাকি’।
মোরগ ডাকে ফুলিয়ে ঝুঁটি, খোকন
ডাকে, ‘হুম,
কুক্কুরু-কু শিখে আমি শিখবো
বাকবাকুম’।
পায়রা জোড়া উড়াল দিলে ময়না
নাচায় লেজ
পাল্লা দিয়ে নাচে খোকন, দেখায়
আপন তেজ।
নদী ডাকে, ‘আমার সঙ্গে ছুটবে দিগ্বিদিক?’
ছুটতে ছুটতে ঢেউয়ের আগে খোকন
হাসে, ফিক।
আব্বু হাঁকে, ‘যাস্ নে সোনা, আম্মু ডাকে,
আয়’
ছুটতে ছুটতে দুষ্টু চোখে খোকন
ফিরে চায়।
পাঠশালাতে বেত বাগিয়ে হরেন
স্যারের তাড়া
থোড়াই কেয়ার খোকন সোনার, ডিগবাজিতে
খাড়া।
আ পড়ালে আম পড়ে সে, খ পড়ালে
খাই
দুষ্টুমিতে এই ছেলেটির আর তো
জুড়ি নাই।
এসব দেখে হেডস্যার তো হেসেই
হলেন খুন,
স্যারের হাতে আমের আচার, সঙ্গে
সাদা নুন।
নুনের আচার দেখে খোকার নাচন
গেলো থেমে
জিভের ডগায় টসটসে জল, শরীর
গেলো ঘেমে।
আদর-মাখা হাত বাড়িয়ে স্যার
এগোলেন যেই
বাধ্য ভীষণ খোকনসোনা, দুষ্টুমি
আর নেই।
নতুন মানুষ
নতুন শিশু নতুন মানুষ নতুন
অধিকার
পূর্ণ মানুষ করো তাকে, নাও
দায়িত্ব-ভার।
জন্ম মানে জল-জন্ম, মায়ের গর্ভ
শুরু
তাকে ঘিরে পিতামাতার বুকের
কাঁপন শুরু।
সসীম হয়ে এলো অসীম, তিনটি ভুবন
ঘুরে
ভ্রূণ-জীবনের মুক্ত-বিকাশ গর্ভ-অন্তঃপুরে।
অভিন্ন সেই এক জীবনে একই ভুবনবাসী
একই মুখে পান ও আহার, একই মুখে
হাসি।
মায়ের, মুখে বাজলে বাঁশি, বাজে
শিশুর মুখে
মায়ের বুকে লাগলে আঘাত, লাগে
শিশুর বুকে।
যত্নে রাখো মা ও শিশু, স্বাস্থ্য
রাখো ঠিক
শয়ন, স্বপন, অন্নগ্রহণ, চলন
সর্বদিক
দশম মাসের দশম দিনে পূর্ণ জীবন
তার
গর্ভজীবন গোপন জীবন যোজন পারাপার।
সময়মতো ধাত্রীসেবা, সময়মতো
চলা
শিশুর জীবন ধন্য জীবন জড়িয়ে
মায়ের গলা।
সেই শিশুটি আলোকশিশু গড়ে আলোকজাতি
সব বিভেদের ঊর্ধ্বে তখন মানুষ
সবার জ্ঞাতি।
আলোকশিশু আলোকপিতা আলোকমাতার
হাসি
আলোকশিশুর আলোকমানুষ আমরা ভালোবাসি।
কিডজ পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |