একটি গাছ তার পায়ের কাছে গজানো একটি খাগড়াকে বলল- আচ্ছা ছোট, কেন তুমি তোমার শেকড় গভীরভাবে মাটিতে রোপণ কর না? শেকড় মাটির গভীরে থাকলে আমার মতো সাহস করে তোমার মাথা বাতাসে তুলতে পারতে!
আমি আমাকে নিয়ে অনেক সন্তুষ্ট। আমি এত বড় নাও হতে পারি, কিন্তু আমি মনে করি আমি নিরাপদ। খাগড়াটি জবাব দিলো।
গাছ ঠাট্টার স্বরে বলে উঠল- নিরাপদ! এমন কে আছে যে আমাকে শেকড়সহ উপড়ে ফেলবে বা মাটিতে মাথা নত করাবে?
কিন্তু শীঘ্র গাছটিকে তার গর্বের জন্য অনুতপ্ত হতে হলো। কারণ, একটি ঘূর্ণিঝড় এসে গাছটিকে শেকড় থেকে উপড়ে ফেলে মাটিতে ছুড়ে করলো। তখন ছোট্ট খাগড়াটি বাতাসের তোড়ে বাঁকছিল, কিন্তু ঝড় কেটে গেলে সে সোজা হয়ে দাঁড়ায়।
২.
শেয়াল ও বেড়াল
শেয়াল আর বেড়াল বসে গল্প করছিল, শত্রুর কাছ থেকে কীভাবে পালাতে হয় এই হলো গল্পের বিষয়।
পালানোর ক্ষেত্রে শেয়াল তার নিজের চাতুর্যের জন্য বেড়ালের কাছে গর্ব করছিল। সে বলছিল- আমার কাছে পালানোর অনেক কৌশল আছে, শত্রুর থেকে পালানোর একশ উপায় আমি জানি।
কিন্তু আমার একটাই উপায়। আমি সাধারণত একটি উপায়েই নিজেকে বাঁচাতে পারি, বেড়ালটি বলল।
ঠিক সেই মুহূর্তে তারা একটি হরিণের কান্নার শব্দ শুনতে পেল। বেড়াল দ্রুত একটি গাছের ঝোপে ঝাঁপিয়ে পড়ে আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখল। তারপর শেয়ালকে বলল- এটা আমার পরিকল্পনা, তুমি কী করতে যাচ্ছ?
শেয়াল প্রথমে একটি উপায় ভাবল, তারপর অন্য উপায়। যখন সে উপায় নিয়ে ভাবছিল তখন শিকারিরা তার আরও কাছে আসতে থাকে এবং উপায় নিয়ে বিভ্রান্ত শেয়ালটি শিকারিদের হাতে ধরা পড়ে।
এসব দেখে একজন বিড়বিড় করে বলল, একশ থেকে কেবল একটি নিরাপদ উপায় ভালো যা মুহূর্তে বাস্তবায়ন করা যায়।
৩.
সিংহের আবরণে গাধা
এক গাধা একবার এক সিংহের চামড়া খুঁজে পেল। শিকারিরা শুকানোর জন্য এটা রোদে ফেলে রেখেছিল।
গাধা সিংহের চামড়া গায়ে লাগিয়ে নিজের গ্রামের দিকে চলে গেলো। সব মানুষ এবং প্রাণী তাকে সিংহ মনে করে তার পথ থেকে পালিয়ে গেল।
সে নিজেকে একটি গর্বিত গাধা মনে করতে লাগল। আনন্দে সে তার কণ্ঠে আওয়াজ তুলল। আওয়াজ শুনে সবাই তাকে চিনতে পারল। এসব দেখে তার মালিক তাকে ভয়ঙ্কর শাসাল।
কিছুক্ষণ পর একটি শেয়াল তার কাছে এসে বলল- পোশাকে তুমি দুরন্ত হতে পার, কিন্তু যথাযথ জ্ঞান না থাকলে তোমার কথায় তোমার মূর্খতা প্রকাশ পাবে।
৪.
বৃদ্ধ নার্স ও নেকড়ে
একজন বৃদ্ধ নার্স তার কোলে বসা একটি শিশুকে বলল- শান্ত হও, নইলে তোমাকে নেকড়ের কাছে ফেলে দেব।
ঠিক তখনই একটি নেকড়ে জানালার নিচ দিয়ে যাচ্ছিল। নার্সটির কথা শুনে বাড়ির পাশে বসে সে অপেক্ষা করতে লাগল।
আমি আজ বড় সৌভাগ্যবান। নিশ্চিত,
বাচ্চাটি শীঘ্র কান্নাকাটি করবে এবং আমি অনেকদিন পর এমন ছোট্ট শিশু খাবো, নেকড়ে ভাবল।
তাই সে অপেক্ষা করতে লাগল আর অপেক্ষা করতে লাগল। শেষ পর্যন্ত শিশুটি কাঁদতে শুরু করল এবং নেকড়ে জানালার সামনে এগিয়ে এলো এবং নার্সের দিকে তাকিয়ে লেজ নাড়াতে লাগল।
কিন্তু নার্স যা করল এর জন্য সে প্রস্তুত ছিল না। তা হলো, নার্স জানালা বন্ধ করে সাহায্যের জন্য বাড়ির কুকুরগুলো ডাকল।
কুকুরের তাড়া খেয়ে নেকড়ে দৌড়াতে দৌড়াতে বলতে লাগল, শত্রু প্রতিশ্রুতি দেয় তা ভঙ্গ করার জন্যই।
[ফেইরি টেইলজ ডটকম থেকে অনূদিত]
কিডজ পাতায় বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com। সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না! |