ক্যাটাগরি

‘আপনি পরশ পাথর, আমার জীবনটাই পাল্টে গেল’

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীন-গৃহহীনদের মধ্যে যে ৩৩ হাজার পরিবারকে ঘর বুঝিয়ে দেন, তাদের মধ্যে ছিলেন ফরিদপুরের নগরকান্দার সাবিরুন আক্তার।

গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা নতুন ঘর হস্তান্তরের পাশাপাশি চারটি উপজেলা প্রান্তে থাকা সুবিধাভোগীদের কথা শোনেন।

এসময় নগরকান্দার পোড়াদিয়া বালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক বছর আগে ঘর পাওয়া সাবিরুন বলেন, “চার বছর আগে আমি স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে ভাইদের সংসারে আশ্রয় নিই। ভাইদের অভাবের সংসারে সেলাই কাজ করে যা আয় হত, তা দিয়ে সাহায্য করতাম। আপনার দয়ায় ও আল্লাহর রহমতে আমি একটি পাকা সুন্দর ঘর পেয়েছি। নতুন ঘর পাওয়ার পর জমানো সঞ্চয় দিয়ে এবং কিছু লোন করে স্বামীকে অটোরিকশা কিনে দিই।

“আমি শুধু সেলাই কাজ নয়, ঘরের মধ্যে টুকটাক কাপড়-চোপড়েরও ব্যবসা করি। এখন আমাদের মাসিক আয় ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। আমি সংসার ও নতুন ঘর পেয়ে খুবই খুশি ও আনন্দিত। আমার স্বপ্ন, আমি কয়েকটি সেলাই মেশিন কিনে গার্মেন্টস (কারখানা) করব।”

গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মঙ্গলবার গৃহহীন-ভূমিহীন ৩৩ হাজার ঘর বুঝিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মঙ্গলবার গৃহহীন-ভূমিহীন ৩৩ হাজার ঘর বুঝিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

“আপনি আমার সোনার বাংলার পরশ পাথর, আপনার ছোঁয়ায় আমার জীবনটাই পাল্টে গেছে। আপনাকে দূর থেকে নয়, কাছ থেকে দেখতে চাই। আপনার দাওয়াত থাকলো,” কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন এই নারী।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে সারাদেশে ভূমিহীন-গৃহহীনদের ঘর করে দিচ্ছে। একে বলা হচ্ছে- ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার’।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প থেকে জানানো হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ২ শতক জমির সঙ্গে ঘর পেয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯ পরিবার। এবার তৃতীয় ধাপে ৪৯২টি উপজেলার ঘর পেয়েছে ৩৩ হাজার পরিবার।

নতুন ঘর পেয়ে মানুষগুলো প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া করেন।

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর মঙ্গলবার বুঝিয়ে দেওয়া হয় ৩৩ হাজার পরিবারকে। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর মঙ্গলবার বুঝিয়ে দেওয়া হয় ৩৩ হাজার পরিবারকে। ছবি: পিআইডি

ঈদের আগেই যেন ঈদ নিয়ে এল নতুন ঘর
 

নগরকান্দায় নতুন ঘর পাওয়া উষারাণী মালো বলেন, “আমি বাবার বাড়িতে অনেক কষ্ট করেছি। এসএসসি পাস করেছি। আমার স্বামী নৌকার মাঝি। আর মাছ ধরে। সেই মাছ বিক্রি করে কোনোরকমে সংসার চলে। আমাদের কোনো জায়গা-জমি ছিল না।

“জীবনেও ভাবিনি কোনো দিন ঘর হবে। আপনি আমাদের জমিসহ একটি পাকা ঘর দিয়েছেন। এই ঘর পেয়ে আমরা অনেক খুশি। এখানে অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে। মন্দির-মসজিদ আছে, স্কুল, পুকুর, খোলা মাঠ আছে। বাড়ির সামনে একটি নদীও আছে।”

নিজের ঘরে শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এই নারী বলেন, “আমার স্বামীর ধরা মাছ আপনাকে খাওয়াতে চাই। আপনি আমাদের দেখতে আসবেন।”