ক্যাটাগরি

ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনেও দেরিতে ছাড়ছে ট্রেন

সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায়। ট্রেনটি কমলাপুর ছেড়েছে নির্ধারিত সময়ের কিছু সময় পর।

সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে নীলসাগর এক্সপ্রেসের নীলফামারীর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টা পর সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে যাত্রা শুরু করে সেই ট্রেন।

সকাল ৬টায় মহানগর এক্সপ্রেসের চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেটিও স্টেশন ছাড়ে নির্ধারিত সময়ের পরে।

সকাল ৯টা ২০ মিনিটে রংপুর এক্সপ্রেস ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও দেরী হওয়ায় বিকল্প হিসেবে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ছেড়ে দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

তবে এখন পর্যন্ত ‘বড় ধরনের’ শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি বলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ভাষ্য।

রেলওয়ের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা এবং কমলাপুরের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি কিছুটা বিলম্বে ঢাকায় এসেছে। আবার ৩০ মিনিটের মধ্যেই আমরা ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দিয়েছি।

“আসলে অন্য সময়ের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি যাত্রীর চাপ রয়েছে এই ট্রেনে। যেখানে আমাদের যাত্রাবিরতিতে দুই মিনিট স্টপেজ থাকার কথা, যাত্রী বেশি হওয়ার কারণে সেখানে বেশি সময় লাগছে।”

রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে সিঙ্গেল লাইনের কারণে এই জটিলতা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আমিনুক হক বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, যাতে সময়মত স্টেশন থেকে ট্রেনগুলো ছেড়ে যায়। যাতে যাত্রীরা কম ভোগান্তিতে এবং স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারেন।”

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কমলাপুর থেকে ১৮টি ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে গেছে। সারা দিনে মোট ১১৮টি ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করবে।

ঢাকা থেকে সকাল পৌনে ১১টায় কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করা কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের জন্য সকাল ৮টা থেকেই স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন মিরপুরের বাসিন্দা তাফসির ইহতেশাম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “গত ঈদও বাড়িতে করতে পারিনি৷ এই ঈদে যদি বাড়িতে যেতে না পারি, তাহলে সেটা কষ্টের ব্যাপার হবে। গতকাল যেহেতু ট্রেনের শিডিউল নিয়ে ঝামেলা হয়েছে, তাই আজ আমি রিস্ক নিইনি, আগেই চলে এসেছি।”

বেলা সোয়া ১১টায় কমলাপুর স্টেশনের ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাওয়া জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসের যাত্রী শারমিন জাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদে সবাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই চলে এসেছি। ট্রেনটা যে ভালোয় ভালোয় ধরতে পেরেছি, এতেই খুশি।”

ট্রেনে ঈদযাত্রার প্রথম দিনও বেশ কিছু ট্রেন দেরিতে ছেড়ে যায়। প্রথম দিনের মত দ্বিতীয় দিনের প্রথম ভাগেও খুব বেশি ভিড় দেখা যায়নি কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে।

তবে বৃহস্পতিবার ঈদের আগের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় বিকেল থেকে যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার।

তিনি বলেন, “আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এ বিষয়ে সচেতন আছে।”

ঈদের আগে কবে পর্যন্ত ট্রেন চলবে – জানতে চাইলে আমিনুল হক বলেন, “এটা চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে। যদি ২ মে ঈদ হয়, তাহলে ১ তারিখ পর্যন্ত ট্রেন চলবে, ৩ তারিখ ঈদ হলে ২ তারিখ ট্রেন চলবে। চাঁদ দেখার পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

‘টিকেট যার ভ্রমণ তার’ নীতি বাস্তবায়নে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের প্রসঙ্গ ধরে আমিনুল হক বলেন, “যারা ভ্রমণ করবে তাদের টিকিট চেক করার জন্য আমাদের যারা দায়িত্বে আছেন, যারা টিকিট চেক করবেন, তাদের নির্দেশ দেওয়া আছে, নির্দিষ্ট আইডি ছাড়া তার নামের টিকেটে অন্য কেউ ভ্রমণ করতে পারবে না।”

‘অনেকে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছে’- এমন অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার বলেন, “ঈদের এই সময়ে, অনেকেই বিনা টিকিটে ভ্রমণের চেষ্টা করে থাকেন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, টিকিট কালেক্টর, সকলেই চেষ্টা করছে যাতে কেউ বিনা টিকিটে ভ্রমণ না করে।”

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবারের ঈদযাত্রায় প্রতিদিন ৫৩ হাজার যাত্রী ট্রেনে রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে যাত্রা করছেন। শুধু আন্তঃনগর ট্রেনেই ২৭ হাজারের চেয়েও বেশি আসন রয়েছে।