ক্যাটাগরি

প্রতিবন্ধিতা নিয়ে ‘নেতিবাচক’ শব্দ: তদন্ত প্রতিবেদনে বাদীর নারাজি

বৃহস্পতিবার
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন বাদীর বক্তব্য শুনে আগামী ৮ জুন
আদেশের জন্য দিন রেখেছেন।

ওই
দিন মামলাটি সরাসরি আমলে নেওয়া হবে কি না, নাকি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠানো হবে, অথবা
পুলিশের অন্য কোনো সংস্থা ফের তদন্তের দায়িত্ব পাবে, সে বিষয়ে আদেশ দেবে আদালত।

চ্যানেল
আই সম্প্রচারিত টিভি নাটক ও একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা
সম্পর্কে ‘নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর’
ধারণা ও শব্দ ব্যবহারের অভিযোগে গত বছর ১১ অগাস্ট আদালতে দুটি মামলা করেন প্রতিবন্ধী
অধিকার কর্মী বশির আল হোসাইন।

আদালত
শুনানি শেষে মামলা দুটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- পিআইবিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন
দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়।

গত
১৬ মার্চ ওই দুই মামলায় ‘ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি’
উল্লেখ করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী জীবনান্দ
চন্দ জয়ন্ত।

নারাজি
আবেদনে বলা হয়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাননি, তাই নতুন করে
বা অধিকতর অথবা বিচারবিভাগীয় তদন্তের আদেশ হওয়া জরুরি।

মামলাটি
সরাসরি আমলে নেওয়া অথবা অধিকতর তদন্তের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয় নারাজি আবেদনে।

প্রথম
মামলাটি করা হয় ‘ঘটনা সত্য’ নামে একটি নাটক নিয়ে, যা চ্যানেল আইয়ের ঈদুল আজহার
আয়োজনে গত বছর ২৩ জুলাই প্রচার করা হয়েছিল। এর আগেও নাটকটি নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল।

মামলার
আসামিরা হলেন- অভিনেত্রী মেহজাবিন চৌধুরী, অভিনেতা আফরান নিশো, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা
পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, চিত্রনাট্যকার মঈনুল সানু ও পরিচালক
রুবেল হাসান।

মামলার
অভিযোগে বলা হয়, ‘ঘটনা সত্য’ নাটকে দেখানো সংলাপে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তাদের
বাবা মা এবং পরিবারকে ‘ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’

দ্বিতীয়
মামলাটি করা হয় চ্যানেল আইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠান ‘টু দ্য পয়েন্ট’ এর ১১ জুলাইয়ের পর্ব নিয়ে। যেখানে একজন আলোচকের কথায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের
নিয়ে ‘নেতিবাচক ধারনা’র প্রকাশ
করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।


মামলার আসামিরা হলেন- ফরিদুর রেজা সাগর, শাইখ সিরাজ, অনুষ্ঠান পরিকল্পনাকারী জাহিদ
নেওয়াজ খান, প্রযোজক রাজু আলিম, উপস্থাপক সোমা ইমলাম এবং আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকা
ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন।

মামলায়
বাদীর অভিযোগ ‘টু দ্য পয়েন্ট’ অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিলের খেলা প্রসঙ্গে
ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের একটি মন্তব্য নিয়ে।

সেখানে
অভিযোগ করা হয়, ওই টকশোতে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আমার নিজের
ছেলেটারে প্রতিবন্ধী বানাইয়া রাইখা আমি এখন আর্জেন্টিনার ছেলে এবং ব্রাজিলের ছেলে নিয়া
লাফাচ্ছি। লাফানো ঠিক আছে। আমরা অনেক ছোটবেলা থেকে ম্যারাডোনার ভক্ত, কিন্তু নিজের
ছেলেটারে এভাবে প্রতিবন্ধী বানাবো?’

দেশের
ফুটবল খেলার মানের অবনতি, দুর্বল ব্যবস্থাপনা, ব্যর্থতা ও অবস্থার সঙ্গে তুলনা করে
‘প্রতিবন্ধী বানাইয়া রাইখা’
এবং ‘এভাবে প্রতিবন্ধী বানাব’
শব্দবন্ধ ব্যবহারের মাধ্যমে গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে
‘নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর’
ধারণা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

নারাজি
আবেদনে নাটকের শেষে সংযোজিত একটি অডিও বার্তার উল্লেখ করে বলা হয় “পাপের ফল মানুষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না, প্রত্যেককেই তার নিজ কৃতকর্মের
ফল ভোগ করতে হয়।

“কখনও কখনও আমাদের কোনো অনৈতিক কাজ বাস্তব জীবনে
চরম শাস্তি নিয়ে আসতে পারে। যা হয়তো জীবনব্যাপী ভোগ করতে হয়।”

আবদনে
বলা হয়, এ ধরনের ভ্রান্ত ধারণা প্রচারের ফলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সমাজে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির
মুখে পড়ে। এ ধরনের বার্তা প্রতিবন্ধ্বী ব্যক্তিদের কল্যাণে নেওয়া রাষ্ট্রীয় নীতি-আইন
ও পরিকল্পনা বিরুদ্ধ।

“অথচ তদন্ত কর্মকর্তা এ বিষয়টি এড়িয়ে আইন আদালতের
বিচারকের মতো তার মতামত রেখেছেন।”

আরও
পড়ুন


প্রতিবন্ধিতা নিয়ে ‘নেতিবাচক’ শব্দ: দুই মামলায় প্রতিবেদন পেছাল তৃতীয়বার
 

প্রতিবন্ধিতা নিয়ে ‘নেতিবাচক শব্দ’, দুই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পেছাল
 

নাটকে, আলোচনায় প্রতিবন্ধিতা নিয়ে ‘নেতিবাচক’ শব্দ, মামলা তদন্তের নির্দেশ
 

‘দায়িত্বহীন’ কাজ হয়েছে, ‘ঘটনা সত্য’ নাটক নিয়ে এফটিপিও