বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনাসভায় তিনি বলেন, “মানুষ চায় আমরা রাস্তায় মোকাবিলা করি, মানুষ চায় আমরা মাইর খাই, মানুষ চায় আমরা পাল্টা মাইর দেই।
“যুদ্ধ জয় করতে চাইলে আপনি একতরফা গুলি খাবেন, গুলি করবেন না- এটার নাম যুদ্ধ না…। আমরা একতরফা মাইর খেয়ে যাচ্ছি। আর মামলাবাজি আর আদালতে হাজিরা দিচ্ছি।”
আঘাত হলে ‘পাল্টা আঘাতের’ জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, “আমাকে মারবে, আমার বেঁচে থাকার অধিকার থাকবে না আর আমাকে যে মারবে তাকে আমি কিছু বলমু না, তাকে গালে চুমু খামু?
স্থায়ী কমিটির এই সদস্য প্রশ্ন করেন, “রাষ্ট্রের সংবিধানে কি লেখা আছে আমাকে ধরে ধরে পিটাবে?”
‘আইনজীবীরা কি কর্মবিরতি করবে?’
ভোট পুনর্গণনা করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সমিতি সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদকের নাম পাল্টে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
মারামারির পর ভোট ‘পুনর্গণনা’ শেষে সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক পদে দুলালকে বিজয়ী ঘোষণা
সুপ্রিম কোর্ট বারের ভোটের ফল ঘোষণা নিয়ে হাতাহাতি, কিল-ঘুষি
তিনি বলেন, “এই যে সুপ্রিম কোর্টে যে কাজটা করল, এই কাজটার পরে আমাদের আইনজীবীরা কি আদালতে যাওয়া একদিনের জন্য বন্ধ করবেন? আজকে সর্বোচ্চ বিচারাঙ্গনে যে ঘটনা ঘটাল, এটার প্রতিবাদে কি আমাদের আইনজীবীরা কোট-কাচারিতে যাওয়া বন্ধ করবেন? আমার মনে হয় না।
“আমার মনে হয় পুলিশ যদি রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়, তা ভেঙে হলেও যাবে। কারণ বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আমাদের আইনজীবীরা একদিনের জন্যও কর্মবিরতি দেয়নি।”
বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা সরব না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে গয়েশ্বর বলেন, “আমি আইনজীবীদের প্রতি সম্মান রেখেই বলতেছি, এই সুপ্রিম কোর্ট, ঢাকা কোর্টে আইনজীবীরা আমাদেরকে তো বার বার নির্বাচিত করেছেন।
“আমাদের এই প্রতিনিধিরা, এই নেতারা কোট-কাচারিতে আইনের শাসনের জন্য, ন্যায় বিচারের জন্য বা আইনজীবীদের পক্ষে অথবা বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে কখন নামবেন, কী প্রতিবাদ করবেন?
“মাঝে-মধ্যে দুই-চারজন ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলে হয়ে যায় কি? হয় না।”
আইনজীবীদের অতীতের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, “এই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট শামসুল হক চৌধুরী প্রেসিডেন্ট ছিলেন। কত ধানে কত চাল এরশাদকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
“শামসুল হক সাহেবের সাথে দেখা করতে গিয়ে উনার রুমে বসে আমরা যুব সংগ্রাম পরিষদ গঠন করলাম। উনি বললেন, আপনারা সব যুবক এক হন। উনি কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দল করতেন না।
“তাহলে যেখানে ন্যায় বিচার হয় না, সেখান থেকে যদি প্রতিবাদ না আসে কারা প্রতিবাদ করবে?”
ঢাকা কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদল নেতাদের উদ্যোগে এ আলোচনাসভায় প্রতিষ্ঠানটির ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মীর সরফত আলী সপু বলেন, “দেশে ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটাতে হলে ছাত্র সমাজকে সোচ্চার হতে হবে, প্রতিবাদী হতে হবে। অতীতে এই ছাত্র সমাজই সকল ফ্যাসিবাদের বিষ দাঁত ভেঙে দিয়েছে।”
ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি হারুনুর রশীদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্র নেতা আসাদুল করিম শাহিন, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, জাকির হোসেন, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, কামাল আনোয়ার, নুরুল ইসলাম নয়ন।