বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পেটার ডি হাসের সঙ্গে মতবিনিময়কালে
তিনি একথা বলেন।
একক দেশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় ক্রেতা
রাষ্ট্র। আর একক অঞ্চল হিসাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি
করে বাংলাদেশ।
এ খাতের সংস্কার ও উন্নয়নে বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপগুলোর কথা তুলে ধরে
টিপু মুনশি বলেন, “বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের উৎপাদন খরচ বাড়লেও ক্রেতারা সে তুলনায় মূল্য
বৃদ্ধি করেনি। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।”
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে প্রথম এই বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রীর বাংলাদেশের
নির্মাণাধীন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক
আরও জোরদার করার আহ্বান জানান বলেন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ
স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। অনেকগুলোর কাজ এখন
শেষ পর্যায়ে। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের
বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন।
গত এক দশকে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের ব্যাপক সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে
তিনি বলেন, এ খাতের টেকসই উন্নযনের জন্য শ্রম আইন সংশোধন করে ‘বিশ্বমানের’ করা হয়েছে।
দেশের কারখানাগুলো নিরাপদ ও কর্মীবান্ধব করা হয়েছে। বিল্ডিং ও ইলেকট্রিসিটি সেইফটি
নিশ্চিত করা হয়েছে।
“বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের লিড গ্রিন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির সনদপ্রাপ্ত
১৫৭টি ফ্যাক্টরি রয়েছে। বিশ্বের প্রথম ১০টি গ্রিন ফ্যাক্টরির মধ্যে বাংলাদেশেই নয়টি।
বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ।”
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের বাণিজ্য ও অর্থনৈকিত সম্পর্কের
কথাও বৈঠকে তুলে ধরেন টিপু মুনশি।
রাষ্ট্রদূত পেটার হাস বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ‘গুরুত্বপূর্ণ বন্ধুরাষ্ট্র’।
বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান।
“বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশন করে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত
হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যক সম্পর্ক
আরও বৃদ্ধি পাবে।”
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সাথে বাণিজ্য সুবিধা সৃষ্টির
জন্য পিটিএ বা এফটিএ-এর মত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাতে সাময়িকভাবে
বাংলাদেশ শুল্ক হারালেও দীর্ঘ মেয়াদে লাভবান হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত
সচিব (এফটিএ) নূর মো. মাহবুবুল হক, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি-২) মো. আব্দুর রহিম খান
এ সময় উপস্থিত ছিলেন।