শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব সংযোগ সড়কে এবং সেতু পার হয়ে সিরাজঞ্জের সীমানা পর্যন্ত তেমন কোন অসহনীয় যানজট দেখা যায়নি।
উত্তরবঙ্গের প্রবেশ পথ টাঙ্গাইলের এলেঙ্গার দুই লেন সড়কে ২০০ এপিবিএন সদস্যসহ আট শতাধিক পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। অপরদিকে মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের সীমানায় পাঁচ শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ঢাকা থেকে যানবাহনগুলো চার লেন সড়কে দিয়ে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পর্যন্ত আসতে পারে। কিন্তু এলেঙ্গার পর থেকে সেতু পর্যন্ত সড়ক দুই লেন। চার লেনের যানবাহন দুই লেন সড়কে প্রবেশের সময় কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়।
এবার এলেঙ্গা থেকে সেতুর টোল প্লাজার কাছে গোলচত্বর পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার একমুখী (ওয়ানওয়ে) করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এলেঙ্গা থেকে এই সড়ক দিয়ে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন চলবে।
আর উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী যানবাহন সেতু পার হওয়ার পর বিকল্প সড়ক হিসেবে গোলচত্বর থেকে উত্তর দিকে ভূঞাপুর হয়ে এলেঙ্গা পর্যন্ত আসবে।
এ ছাড়া যাত্রীরা যানজটে আটকা পড়লে মহাসড়কের পাশে পেট্রোল পাম্প, হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোতে যাতে শৌচাগার ব্যবহার করতে পারে সেজন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার সড়কের পাশে পাম্প ও রেস্তোরাঁ নেই। তাই ওই অংশে ২৫টি অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ইফতার ও সেহরিতে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত যানজটে আটকে পড়া মানুষের পানি, শুকনা খাবার সরবরাহ ও ১৫টি অস্থায়ী টয়লেট জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অপরদিকে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার হাসিবুল আলমও বঙ্গবন্ধ সেতুর পশ্চিম পাড়ের গোলচত্বর থেকে উত্তরবঙ্গের পথে যানজট নিরসনে নানা প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এরই মধ্যে নলকা দ্বিতীয় সেতুর এক পাশ খুলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও যানজট এড়াতে জেলার মহাসড়ককে চার সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু গোলচত্বর থেকে পাঁচলিয়া বাজার পর্যন্ত এক, পাঁচলিয়া বাজার থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত দুই, হাটিকুমরুল থেকে কাছিহাটা টোল প্লাজা পর্যন্ত তিন ও হাটিকুমরুল থেকে বাঘাবাড়ি পর্যন্ত চার নম্বর সেক্টর করা হয়েছে।
এখানে ৫৭২ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে এবং জেলা পুলিশের পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশও দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া তিনটি কুইক রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে।
মহাসড়কে পুলিশের এ দায়িত্ব পালনে অবহেলা বরদাস্ত করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন পুলিশ সুপার।
সিরাজগঞ্জ
শুক্রবার সকালে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়ক থেকে নলকা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার এলাকায় উত্তরাঞ্চলগামী লেনে তীব্র যানজট দেখা দেয়। তবে পুলিশের তৎপরতায় বেলা ১১টার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এরপর থেকে মহাসড়কে যানজট না থাকলেও যানবাহনগুলো চলছে ধীরগতিতে।
সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক সালেকুজ্জামান সালেক বলেন, যানবাহনের সংখ্যা বাড়ার কারণে মহাসড়কে ধীরগতি রয়েছে। মাঝে মধ্যে যানজট সৃষ্টি হলেও সেটা দীর্ঘস্থায়ী নয়। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক, জেলা, থানা ও হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে রয়েছে।