করস্বর্গ হিসেবে
পরিচিতি আছে মধ্য আমেরিকার দেশ পানামার। নতুন আইনের মধ্য দিয়ে দেশটির সরকারি এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন
পর্যায়ে ক্রিপ্টো মুদ্রা ব্যবহারের নতুন সুযোগ তৈরি হল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন,
এতে অস্বচ্ছ আর্থিক লেনদেনের একটি কেন্দ্র হিসেবে পানামার কুখ্যাতি আরও বাড়বে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে
অনুমোদিত মুদ্রা হিসেবে বিটকয়েনকে স্বীকৃতি দিয়েছে মধ্য আমেরিকার আরেক দেশ এল সালভাদর।
পানামার এমপি গ্যাব্রিয়েল সিলভার দাবি, এল সালভাদরের উদ্যোগের চেয়েও তাদের বিলটির পরিধি
বড়।
“আমরা শিল্পকর্মের
মত বিভিন্ন ধরনের ক্রিপ্টো সম্পদের উত্থান দেখছি। তাই আমরা নিজেদের কেবল ক্রিপ্টো মুদ্রার
মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাইনি,” বলেন তিনি।
এক প্রতিবেদনে
রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন আইনে ক্রিপ্টো সম্পদের লেনদেন আর ব্যবহারের শর্ত নির্ধারণ করে
দিয়েছে পানামার পার্লামেন্ট। এ ছাড়াও নতুন লেনদেন ব্যবস্থা তৈরি এবং লেনদেনে মূল্যবান
ধাতব পদার্থের ‘টোকেনাইজেশনের’ সুযোগ রাখা হয়েছে। ‘টোকেনাইজেশন’ শব্দটি দিয়ে কোনো সম্পদের
মালিকানা ডিজিটাল ফরম্যাটে রূপান্তরের প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
নতুন আইনের অধীনে
পানামার আইনে বৈধ যে কোনো কাজে লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ক্রিপ্টো মুদ্রা ব্যবহারের সুযোগ
থাকবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের
‘ট্যাক্স হেভেন’ তালিকায় নাম আছে পানামার। অর্থাৎ, দেশটিতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য
করের হার কম, সহজ শর্তে বিনিয়োগ ও আর্থিক লেনদেনের সুযোগ আছে, অর্থের উৎস নিয়ে অত প্রশ্নও
করে না।
বিনিয়োগবিষয়ক
পরামর্শক কোম্পানি ‘কেঅ্যান্ডবি ফ্যামিলি অফিস’-এর প্রধান নির্বাহী রোমেইন ড্রোমার্ড
বলেন, এমনিতেই একটা বাজে ভাবমূর্তি রয়েছে পানামার। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পানামাকে
লেনদেনের স্বচ্ছ্বতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।অথচ দেশটি এখন ক্রিপ্টো কারেন্সি
লেনদেনের যে সুযোগ দিতে যাচ্ছে, তাতে যথাযথ প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে লেনদেন আরও সহজ
হবে।
রয়টার্স জানিয়েছে,
পানামার পার্লামেন্টে নতুন বিলটির পক্ষে ভোট পড়েছে ৩৮টি। দুজন জনপ্রতিনিধি ভোট দেওয়া
থেকে বিরত ছিলেন। বিপক্ষে ভোট পড়েনি একটিও। প্রেসিডেন্ট লরেন্টিনো কর্টিজো সই করলেই
আইন হিসেবে কার্যকর হবে বিলটি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন,
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই এমন নাগরিকদেরও কাজে আসতে পারে ক্রিপ্টো সম্পদ। পানামার ইন্টারনেট
সংযোগ ব্যবস্থা ভালো হলেও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে চারজনে একজনের।
আর নতুন আইন কার্যকর
হলে ক্রিপ্টোবিমুখ ব্যাংকগুলোও ক্রিপ্টো মুদ্রার লেনদেনে সহযোগিতার হাত বাড়াতে আগ্রহী
হবে বলে ধারণা করছেন ক্রিপ্টো ও ব্লকচেইন সেবাদাতা ‘ক্রিপ্টোএসপিএ’ এর প্রতিনিধি হোজে
ফাব্রেগা।
তবে কেঅ্যান্ডবির
প্রধান নির্বাহী বলছেন, নতুন আইনে মূল ধারার ব্যাংকগুলোর ভূমিকা কেমন হবে, সে বিষয়টি
এখনও স্পষ্ট নয়। ছোটো ও মাঝারি আকারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও খুব সহজে অস্থিতিশীল
ক্রিপ্টো মুদ্রার ওপর নির্ভরশীল হবে না বলেও তিনি মনে করছেন।