ইউক্রেইনে রুশ বাহিনীর লড়াইয়ের এই সময়ে রাশিয়া কুচকাওয়াজে তাদের বিশাল অস্ত্রসম্ভার জাহির করার মধ্য দিয়ে এই সংকেত পাঠাবে। ইউক্রেইনে আগ্রাসন শরুর পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপ করা একের পর এক নিষেধাজ্ঞায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন পুতিন।
কিন্তু এই বিচ্ছন্নতার মুখেও তিনি অটল। কুচকাওয়াজে সেনা, ট্যাংক, রকেট এবং ব্যালিস্টিক নানা ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শনীর আগে পুতিন রেড স্কয়ারে ভাষণ দেবেন। আর তার এই ভাষণের সময়ই আকাশে চক্কর দেবে রাশিয়ার আইএল-৮০ ‘ডুমসডে’ কমান্ড বিমান।
২০১০ সালের পর এই প্রথম ‘ডুমসডে’ বিমান উড়াতে চলেছে রাশিয়া। ইলিউশিন আইএল-৮০ মডেলের এই বিমানগুলোকে বলা হয়, ‘প্রলয়ঙ্করী’ বিমান বা ‘কেয়ামতের’ বিমান। রাশিয়ার সবচেয়ে বিপজ্জনক কৌশলগত এই ফাইটার জঙ্গি বিমান পারমাণবিক যুদ্ধে শত্রু নির্মূলের লক্ষ্য নিয়েই তৈরি।
তাছাড়া, পরমাণু যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে স্থলভাগে থাকা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ধ্বংস হয়ে গেলেও এই বিমান উড়ন্ত নিয়ন্ত্রণ কক্ষ হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশ্বের অনেক দেশ এ বিমানকে অত্যন্ত বিপজ্জনক বলেই মনে করে। এই প্রলয়ংকরী বিমান উড়িয়েই পুতিন পশ্চিমাদেরকে প্রলয়সংকেত দিতে চান বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বকে সরাসরি সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলতে চান, পরিস্থিতি বেশি বিগড়ে গেলে এবং রাশিয়া অস্তিত্ব সংকটে পড়লে মস্কো যে কোনও মূল্যে এর প্রতিশোধ নিতে পারে এবং ‘ডুমসডে’ বিমান ব্যবহার করে তারা নিজেদেরকে শত্রুর অস্ত্র থেকেও বাঁচাতে পারে।
বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে দুইটি মিগ-২৯ জঙ্গি বিমান এই ডুমসডে প্লেনকে পাহারা দিয়ে উড়বে। গত বুধবার কুচকাওয়াজের মহড়ায় এই বিমানটিকে শহরের ওপর দিয়ে উড়তে দেখা গেছে। বিজয় দিবসে এই বিমানের পাশাপাশি উড়বে সুপারসনিক ফাইটার এবং টিইউ-১৬০ স্ট্র্যাটেজিক বোম্বারও।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় একথা জানিয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, প্রায় ১১ হাজার সেনা কুচকাওয়াজে অংশ নেবে। আর রেড স্কয়ারে প্রদর্শন করা হবে ১৩১ ধরনের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামসহ ৭৭টি বিমান।
ইউক্রেইনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন অনবরতই ইহুদি প্রেসিডেন্টের এই দেশকে নাৎসিমুক্তকরণের লক্ষ্য নিয়ে অভিযান চালাচ্ছেন বলে যুক্তি দেখিয়ে এসেছেন।
ইউক্রেইনে বাস করা রুশভাষী জনগণকে নাৎসিদের নিপীড়ন থেকে সুরক্ষিত রাখতেই রাশিয়া এই অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি করে এসেছেন তিনি। সেইসঙ্গে নেটো জোটের সম্প্রসারণের আশঙ্কায় রাশিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির মুখে থাকার কথাও বলেছেন পুতিন।
তবে তার সেইসব যুক্তি ধোপে টেকেনি। ইউক্রেইন এবং পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার নাৎসি নিপীড়নের অভিযোগ বাজে কথা বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তারা বলছে, পুতিন কোনও উস্কানি ছাড়াই ইউক্রেইনে আগ্রাসন চালাচ্ছেন।