জয়ের উচ্ছ্বাস
কিংবা পরাজয়ের হতাশা, কোনোটিতেই লম্বা সময় ডুবে থাকার সুযোগ পেশাদার জগতে নেই। এখানে
ছুটে চলতে হয় বাস্তবতার পথ ধরে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ
জয়ের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার রেশ থাকতে থাকতেই ম্যানচেস্টার সিটিকে যেমন নেমে পড়তে হচ্ছে
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে শিরোপা জয়ের অভিযানে। পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা দল রোববার খেলবে
নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে।
তবে গুয়ার্দিওলার
মনে এখনও বুধবার রাতের দুঃসহ অভিজ্ঞতার বিষাদের ছাপ। ৮৯ মিনিট পর্যন্ত দুই লেগ মিলিয়ে
দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে তার দল। সেখান থেকেই রিয়াল মাদ্রিদের রূপকথাময় প্রত্যাবর্তন
সিটির জন্য আসে দুঃস্বপ্ন হয়ে।
ম্যাচের পর সিটির
ফুটবলারদের মাঠে দেখা যায় স্তব্ধ হয়ে বসে বা দাঁড়িয়ে থাকতে। ডাগআউটে গুয়ার্দিওলা ছিলেন
যেন বিধ্বস্ত।
অমন পরাজয়ের পর
দলের কারও সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোনো কথা বলেননি গুয়ার্দিওলা। ম্যাচের পর ফুটবলারদের
প্রতি কি বার্তা ছিল কোচের, প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচের আগে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে এই
প্রশ্নে সিটি কোচের উত্তর, “কিছুই না… কোনো কথা হয়নি আমাদের।”
গুয়ার্দিওলার মতে,
কোনো কথায় এই ব্যথার উপশম হয় না।
“আমরা যে অনুভূতির
ভেতর দিয়ে যাচ্ছি, কোনো কথায় এখানে কোনো কাজ হবে না। এখানে প্রয়োজন সময় নেওয়া, যতটা
ভালো সম্ভব ঘুমিয়ে নেওয়া এবং নতুন লক্ষ্য নিয়ে ভাবা।”
অনেক অর্থ খরচ
করে দুর্দান্ত সব ফুটবলার নিয়ে গড়া দল আরও একবার ব্যর্থ ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের
অধরা ট্রফি এনে দিতে। স্বয়ং গুয়ার্দিওলার কণ্ঠেই এখন অনিশ্চয়তা আর সংশয়ের সুর।
“হয়তো দলকে এটা
অর্জনে সহায়তা করার মতো যথেষ্ট ভালো আমি নই। অন্য কোনো ম্যানেজার বা অন্য ফুটবলারদের
নিয়ে দল গড়া হলে কী হতো, কে জানে! আমাদের জন্য প্রতিটি টুর্নামেন্টে নিজেদের মেলে ধরতে
পারাই অনেক সম্মানের।”
গুয়ার্দিওলা জানালেন,
শনিবার তিনি দলের সবার সঙ্গে কথা বলবেন এবং লিগ শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে আবার মনোযোগ দেবেন।
লিভারপুলের চেয়ে মাত্র ১ পয়েন্ট ওপরে থেকে শীর্ষে তারা। এখানেও তাই একটু পা হড়কালেই
লক্ষ্য চলে যেতে পারে দূরে।
তবে রিয়ালের কাছে
হারের বেদনাও যে এত দ্রুত মিইয়ে যাওয়ার নয়! গুয়ার্দিওলা বললেন, নিজেদের সঙ্গে লড়াই
করেই এগোতে হবে সামনে।
“ছেলেদের এটা
(রিয়ালের কাছে হার) ভুলে যাওয়ার দরকার নেই। কিভাবে এটা ভুলবে ওরা? নিউক্যাসলের বিপক্ষে
মাঠে নেমেও এটা সবার মাথায় থাকবে নিশ্চিতভাবেই। তবে আমার ফুটবলারদের আমি চিনি, ট্রেনিং
সেশন, মিটিং, গা-গরমে ওদের দেখি যে ওদের নিবেদন কতটা। এটা নিয়ে আমার কোনো সংশয় নেই।”
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের
ট্রফি জয় করা নিয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বা আবু ধাবি ভিত্তিক মালিকপক্ষের কোনো চাপ নেই বলেও
দাবি করলেন বার্সেলোনার হয়ে দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ী এই কোচ।
“ক্লাব আমাকে কখনোই
বলেনি কিছু জিততে হবে। তারা বলেছে যতটা সম্ভব ভালো খেলতে, ইংল্যান্ডে ও ইউরোপে সব দলের
সঙ্গে সবটুকু দিয়ে লড়াই করতে। লোকে যা ভাবে, তার পুরোপুরি বিপরীত ভাবনা ক্লাবের।”