ক্যাটাগরি

রবীন্দ্রনাথকে সঠিকভাবে ধারণ করলে বিশ্বে মর্যাদা বাড়ত: খালিদ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারিবাড়িতে রোববার
জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এই উপলব্ধির কথা জানান খালিদ মাহমুদ
চৌধুরী।

দেশে বিগত সরকার যেমন জিয়াউর রহমান, এরশাদ বা খালেদা জিয়ার শাসনামলে রবীন্দ্রনাথ
চর্চায় ঘাটতি ছিল জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এসব সরকারের মেয়াদে কবিকে নিয়ে কোনও গবেষণাই
হয়নি।

“যে কারণে আমরা এখনও তার চাওয়া পর্যন্ত পৌঁছতে পারিনি। আমরা যদি রবীন্দ্রনাথকে
সঠিকভাবে ধারণ করতে পারতাম, তাহলে বিশ্বের কাছে অনেক মর্যাদা পেতাম”, বলেন প্রতিমন্ত্রী।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী
উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কাচারিবাড়িতে শুরু হয়েছে তিন দিনের উৎসব।

মহামারীর
কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর এ বছর নানা আয়োজনে উদযাপিত হচ্ছে কবির জন্মদিন। কবির স্মৃতিবিজড়িত
কাচারিবাড়ি সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।

উৎসবের
এই তিন দিন দেশি-বিদেশি রবীন্দ্রভক্তদের পদচারণায় শাহজাদপুরের কাচারিবাড়ি মুখরিত থাকবে
বলে আশা করছেন আয়োজকরা।

অনুষ্ঠানে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান
রবীন্দ্রনাথের গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে রূপ দিয়েছেন। বর্তমান সরকার রবীন্দ্রনাথের
চাওয়া পল্লী অঞ্চলের কৃষকের ঋণ সুবিধার জন্য পল্লী ব্যাংক চালু করেছেন এবং রবীন্দ্র
মেলার জন্য বাজেট বরাদ্দ দিয়েছেন।

“যা আগে ভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হতো। এখন তা রবীন্দ্র চর্চায় ব্যবহৃত
হচ্ছে।”

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার যে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষা
ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে চায়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন তারই উদাহরণ।

সকাল ১০টায় এ অনুষ্ঠান শুরুর কথা থাকলেও, জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদের
সভাপতিত্বে তা শুরু হয় বেলা ১২টায়। উদ্বোধন করেন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক
মেরিনা জাহান কবিতা।


কবিগুরুর জন্মবার্ষিকীতে সেজেছে শাহজাদপুরের কাচারিবাড়ি
 

বক্তব্য দেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহ আজম, সংস্কৃতি
মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শামিম আহম্মেদ, সাবেক সংসদ সদস্য চয়ন ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান
বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদ রহমান, পৌর মেয়র মনির আক্তার খান তরু লোদী।

পরে কাচারিবাড়িতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

উৎসবের এই তিন দিন দেশি বিদেশি রবীন্দ্রভক্তদের পদচারণায় শাহজাদপুরের কাচারিবাড়ি মুখরিত থাকবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।

উৎসবের এই তিন দিন দেশি বিদেশি রবীন্দ্রভক্তদের পদচারণায় শাহজাদপুরের কাচারিবাড়ি মুখরিত থাকবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।

রবীন্দ্রনাথের শাহজাদপুর:

জমিদারি
দেখাশোনার কাজে কবিগুরু ১৮৯০ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম শাহজাদপুরে আসেন। ১৮৯৭ সালের
ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনি এখানে এসেছেন, থেকেছেন।

অষ্টাদশ
শতাব্দীতে নীলকরদের কুঠি ছিল বলে শাহজাদপুরের কাচারিবাড়ি ‘কুঠিবাড়ি’ নামেও পরিচিত।
তিন তৌজির অন্তর্গত ডিহি শাহজাদপুরের জমিদারি পরে নাটোরের রানী ভবানীর জমিদারির অংশ
ছিল।

রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের পিতামহ দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮৪০ সালে এই জমিদারি নিলামে কিনে নেন। প্রায় ১০ বিঘা
জমিসহ ওই কুঠিবাড়ি তখন ঠাকুর পরিবারের হাতে আসে।

শাহজাদপুরে
এসে লেখা রবীন্দ্রনাথের বেশ কিছু কাব্য ‘সোনার তরী’ গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি
কিছু গান, নাটক ও ছোটগল্পও তিনি রচনা করেন কাচারিবাড়িতে বসে।

ঠাকুর
পরিবারের জমিদারি ভাগাভাগি হলে শাহজাদপুরের জমিদারি চলে যায় অন্য শরিকদের হাতে। ১৮৯৭
সালের পর কবি আর শাহজাদপুর আসেননি।