মামলার অষ্টম সাক্ষীকে জেরা করার সুযোগ দিয়ে হাই কোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি বোরহারউদ্দিন ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের আপিল বেঞ্চ সম্প্রতি এ আদেশ দেয়।
২০০১ থেকে ২০০৬ সালে খন্দকার মোশাররফ হোসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ এনে ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মামলাটি করে দুদক। একই বছরের ১৪ অগাস্ট মামলার অভিযোগপত্র দেয় দুদক। পরের বছর ২০১৫ সালের ২৮ অক্টোবর মামলার অভিযাগ গঠন করে আদালত।
পরে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৯
সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরাও করেন।
গত বছর এ মামলার সাক্ষীদের পরীক্ষা করার দিন ঠিক করে আদালত। এর মধ্যে গত বছরের ২ ডিসেম্বর দুদকের অষ্টম সাক্ষী ফেরদৌস আহমেদ খান ওরফে অট্টো খানকে পুনরায় জেরার করতে বিচারিক আদালতে একটি আবেদন করে আসামিপক্ষ।
ফেরদৌস আহমেদ খান ওরফে অট্টো খান বিভিন্ন দেশ থেকে নথিপত্র চেয়ে দুদকের করা বিভিন্ন মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) এর কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করেন।
তাকে পুনরায় জেরা করার কারণ হিসেবে আসামিপক্ষের আবেদনে ওই সময় সাক্ষীকে ‘বৈরি পরিবেশে জেরা করতে হয়েছিল’ বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি তিনটি প্রশ্নের বিষয়ে জেরা করা হবে বলে আবেদনে বলা হয়।
মুদ্রাপাচারে অভিযুক্ত বিএনপির মোশাররফ
আবেদনের বিষয়ে শুনানি শেষে ওই দিনই তা খারিজ করে দেয় আদালত। এরপর এ আদেশের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ হাই কোর্টে আবেদন জানায়। পরে এ বিষয়ে শুনানি শেষে সাক্ষীকে পুনরায় জেরার সুযোগ দিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি রায় দেয় হাই কোর্ট।
দুদকের আইনজীবী মো.
খুরশীদ আলম খান বলেন, “দুদকের শুনানি না নিয়ে এক পক্ষের (আসামিপক্ষ) শুনানি গ্রহণ করে হাই কোর্ট রায় দিয়েছিল। এ রায়ের বিষয়ে জানতে পেরে দুদক এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করে। পরে দুই পক্ষের শুনানি শেষে হাই কোর্টের রায় বাতিল করে গত ২৫ এপ্রিল আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।”
আদেশের বিষয়ে দুদকের আইনজীবী জানান, ফৌজদারী আইন সংশোধন আইন-১৯৫৮ এর ৮ ধারা অনুযায়ী দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাসহ কোনো বিশেষ আইনের মামলার ক্ষেত্রে কোনো সাক্ষীর একবার জবানবন্দি নেওয়ার পর তার জেরা শেষ হলে তাকে নতুন করে জেরা করার সুযোগ নেই।
“এছাড়া ওই সাক্ষীকে আট দিন জেরা করা হয়েছে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ৩৩(৫)
ধারা অনুসারে দুদকের শুনানি না নিয়ে আদেশ দেওয়া যাবে না, কিন্তু হাই কোর্ট আদেশের আগে দুদকের শুনানি গ্রহণ করেনি; এসব বিবেচনা নিয়ে আপিল বিভাগ নতুন এ আদেশ দিয়েছে।”
খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে মুদ্রাপাচারের অভিযোগে মামলাটি ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন। আগামী ২৫ মে আপিল বিভাগের আদেশের কপি ওই আদালতে দাখিল করা হবে বলে জানান দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।